ভাইভা বোর্ডে ভয় নয়

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:৪৭, শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩, ২৯ বৈশাখ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

নিয়মিতভাবে ‘প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি’ নামে একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব প্রকাশিত হচ্ছে। যা আপনার সব ধরনের চাকরির পরীক্ষায় সফলতা আনতে ভূমিকা রাখবে আশা করি।

ভাইভা ভীতিটা কমবেশি সবার মাঝেই থাকে। আর তা যদি হয় কোনো চাকরির ক্ষেত্রে, তাহলে তো কথাই নেই। অনেকেই অনেক বেশি যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও শুধু ভাইভায় নার্ভাস হয়ে যাওয়ার কারণে চাকরি হারায়। উল্লেখ্য এ বছর ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি)। কিভাবে এই ভীতি দূর করবেন-

ভাইভা বোর্ডে কেমন মনোভাব রাখবেন?: অনেকেই অহেতুক ভীতি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। কি না কি জানতে চায় পরীক্ষকরা, যদি কিছুই বলতে না পারি- ইত্যাদি ইত্যাদি নানা অপ্রয়োজনীয় ভাবনা। ফলে, অনেক সময় যা হয়, জানা উত্তরও ভুল করে বসেন। পরে আফসোস করেন। অহেতুক ভীতি নিয়ে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত হওয়া মানেই সম্ভাবনার পথ বন্ধ করা। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিষয়টি ভীতিকর কিছু নয় বরং উত্তেজনাপূর্ণ উপভোগ্য অনুভূতি হতে পারে।

আপনি সবজান্তা হবেন কিংবা সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পারবেন অথবা সব উত্তরই প্রশ্নকর্তার কাছে যথার্থ সন্তোষজনক বলে বিবেচিত হবে- এমন আশা করা পাগলামির নামান্তর। আবার মিথ্যা তথ্য প্রদান, অতিরিক্ত স্মার্টনেস, অতিমাত্রায় অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে কেউ কেউ মনে করেন যে, প্রশ্নকর্তাকে বোকা বানিয়েছি। এমন ধারণা পরিহার্য অবশ্যই। কারণ, উত্তর শুনে বোর্ডের কেউ কোনো ভুল ধরলেন না বলে মনে করবেন না যে, তাদের বোকা বানানো গেছে। কারণ, যারা বোর্ড সদস্য, তারা নিশ্চয়ই এসব বুঝতে পারেন। তাই এসব বিষয় মাথায় রেখেই ভাইভা বোর্ডে যেতে হবে।

ভাইভার আগে ও পরে কী করবেন: আমরা ভাইভার আগের রাতে প্রচুর পড়াশোনা করি, রাত জাগি। যেটা একেবারেই উচিত নয়। যেটুকু প্রস্তুতি দরকার, তা আগে থেকেই বারবার অনুশীলন করে সেরে রাখতে হবে। শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে কাগজপত্র বা ফাইল এবং প্রয়োজনীয় তথ্য গোছানো বোকামির কাজ। মূল কাগজপত্রের সেট, প্রতিলিপির সেট, ছবি, কলম, পেন্সিল, সঠিকভাবে ফাইলে রাখা হয়েছে কি না, তা যাচাই করে দেখুন। রাতেই সব সুন্দর করে গুছিয়ে রাখুন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে মূল কাগজপত্র ফেরত নিতে হবে, যদি বোর্ড অনুমতি দেয়। পোশাক শালীন ও মার্জিত হতে হবে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য টাই অপরিহার্য হতে পারে। অনেকেই টাই বাঁধতে পারেন না। টাই ব্যবহার করতে হলে ঠিকঠাক অবস্থানে সঠিকভাবে বাঁধাই উত্তম। মেয়েদের জন্য শাড়ি উত্তম। তবে যেমনি হোক সংযত, শালীন এবং সাবলীল পোশাকে উপস্থিত হতে হবে। বিশেষ রঙের পোশাক বা জুতা ব্যবহার করতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা সরকারি চাকরি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নেই। ভাইভা বোর্ডে কাপড় বা পোশাকের দিকে বেশি মনোযোগ মূল প্রশ্নোত্তর পর্বে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

ভাইভা বোর্ডে মনোভাব: সহ্যশক্তি, ধৈর্য, মানসিক স্থিরতা, উত্তরে যুক্তির প্রাবল্য ইত্যাদিও ভাইভার অঙ্গ। নানা ধরনের অনাবশ্যক প্রশ্ন বা মন্তব্য করে আপনার মেজাজও পরীক্ষা করা হয়। না ঘাবড়ে স্থিরভাবে প্রশ্ন বুঝে অল্প কথায় যুক্তিপূর্ণ উত্তর দিন। বিরক্ত হবেন না।
আপনার নাম কে রেখেছেন? নামের অর্থ কী? পারিবারিক এমনকি ব্যক্তিগত প্রশ্নও করা হতে পারে। প্রার্থীর মা কিংবা বাবা যদি শ্রমজীবী মজুর, কৃষক, দোকানি ইত্যাদিও হন, তবে তাদের সম্পর্কে যথাযথ পরিচিতি প্রদান আবশ্যক। ভুল করেও মিথ্যা পরিচয়  দেবেন না। বাবা নৈশপ্রহরী কিংবা কোনো অফিসের নিম্ন শ্রেণিভুক্ত কর্মচারী হলেও কখনো বলবেন না যে তিনি ‘জব’ করেন, স্টাফ ইত্যাদি। বরং সরাসরি পরিচয় দিয়ে উত্তর দেবেন, যাতে প্রশ্নকর্তাকে দ্বিতীয়বার এ বিষয়ে আর প্রশ্ন করে সঠিক তথ্য খুঁজতে না হয়। মনে রাখবেন, বোর্ডের সদস্যদের প্রায় সবাই মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান।

ভাইভায় উত্তর জানা না থাকলে: উত্তর না জানা থাকলে সময় নষ্ট না করে ‘সরি’ বলুন। আমতা-আমতা করে এমন ভাব দেখাবেন না যে আপনি জানেন, অথচ পরিষ্কার করে বলতে পারছেন না। মুখ গোমড়া করেও থাকবেন না। প্রশ্নকর্তার দিকে তাকিয়ে উত্তর দিন। আপনার স্বাভাবিক আচরণ ও ঠান্ডা মাথা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বজায় রাখা জরুরি। বিদায় নেওয়ার আগে অনেকেই অনাবশ্যকভাবে লম্বা বাক্য ব্যবহার করে বোর্ডের বিরক্তি বাড়ান। একটি ছোট বাক্যে শুধু সালাম বা ধন্যবাদ জানানোই যথেষ্ট। আশা করি সুস্থ ও সাবলীল প্রশ্নোত্তরে আপনার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।

দিনবদলবিডি/Rabiul

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়