গরুর মাংসে এলার্জি! যা করবেন

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:১২, রবিবার, ১০ জুলাই, ২০২২, ২৬ আষাঢ় ১৪২৯
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

মাংসের কারণে এলার্জি হলে তা প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে ওই নির্দিষ্ট প্রাণীর মাংস পরিহার করা। যদি এলার্জির পরিমাণ কম হয় তবে…

খাসি বা ছাগলের মাংসে সাধারণত এলার্জি হতে দেখা যায় না। তাই গরুর বদলে খাসি বা ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এসবের মাংস খেতে পারেন। তবে এলার্জির সমস্যা আছে তা জেনেও যদি কেউ যদি মনে করেন গরুর মাংস খাবেনই, সে ক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিতে হবে এক সপ্তাহ আগে থেকেই।

চলছে কোরবানির ঈদ। মাংস তো খেতেই হবে। তবে মাংস খেলেই যদি আপনার দেহে এলার্জির সৃষ্টি হয়, গায়ে রেশ হয় কিংবা নাক বন্ধ হয়ে আসে- তাহলে বুঝে নেবেন মাংসতেই আপনার এলার্জি রয়েছে। অনেকেরই বিভিন্ন প্রাণীর মাংস বিশেষ করে গরুর মাংস খেলে এলার্জি হয়ে থাকে। কোরবানির সময় বেশি পরিমাণ মাংস খাওয়া হয় বলে এ সময় এলার্জি প্রকট আকার ধারণ করে।

মাংসতে এলার্জি হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। যেকোনো বয়সেই এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার নির্দিষ্ট প্রাণীর মাংসতে এলার্জি থাকলে, পরবর্তী সময়ে অন্য প্রাণীর মাংসতেও এলার্জি হতে পারে। এই যেমন- কারো হয়তো গরুর মাংস খেলে এলার্জি হয়, পরবর্তী সময়ে তা মুরগি, হাঁস বা ছাগলের মাংস খেলেও হতে পারে।

মাংসতে এলার্জি হওয়ার লক্ষণ

ত্বকে র‌্যাশ বা ফুঁসকুড়ি হওয়া, পেটে ব্যথা ও বদহজম হওয়া, বমি-বমি ভাব, ডায়েরিয়া নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, মাত্রাতিরিক্ত হাঁচি, মাথা ব্যথা, হাঁপানি। অনেকের এলার্জির সমস্যা ভয়াবহ হলে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

এলার্জির ফলে দেহে কী ঘটে?

মাংসে এলার্জি রয়েছে এমন ব্যক্তি মাংস খেলে শরীর তা ক্ষতিকর বস্তু হিসেবে গ্রহণ করে। ব্যক্তি প্রথমবার মাংস খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং এই ক্ষতিকর বস্তুকে বাধা দিতে দেহ ইমিউনোগ্লোবিন (IgE) নামের নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক ছড়িয়ে দেয়। এই অ্যান্টিবায়োটিকস দেহের ইমিউন কোষের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। এরপর যতবারই মাংস খাওয়া হয় ততবারই ইমিউনোগ্লোবিন অ্যান্টিবায়োটিক দেহকে রক্ষা করতে প্রচুর পরিমাণে হিস্টামিন ও অন্যান্য কেমিক্যাল ছড়িয়ে দেয়। এসব কেমিক্যালের প্রভাবে দেহে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যার মাঝে এলার্জি একটি।

রোগ নির্ণয়

মাংসে এলার্জি হওয়ার লক্ষণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। একেকজন ব্যক্তি একেক ধরনের লক্ষণের সম্মুখীন হয়ে থাকে। কারো খাবারে এলার্জির প্রতিক্রিয়াগুলো ত্বক, শ্বাসযন্ত্রের ট্র্যাক্ট, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাফ্ট এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। মাংস খাওয়ার ফলে এলার্জি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসকের কাছে গেলে আপনাকে যে প্রশ্নগুলোর সম্মুখীন হতে হবে তা হলো- কোন প্রাণীর মাংস খেলে এলার্জি হয়? কতদিন ধরে লক্ষণগুলো দেখছেন? কী কী লক্ষণ দেখা দেয় এবং কতটা সময় স্থায়ী হয়? ইত্যাদি।

প্রতিরোধের উপায় ও চিকিৎসা

মাংসের কারণে এলার্জি হলে তা প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে ওই নির্দিষ্ট প্রাণীর মাংস পরিহার করা। যদি এলার্জির পরিমাণ কম হয় তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ মাংস খেতে পারেন। তবে যদি মাংস খাওয়ার ফলে দেহে মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে তবে তা এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম। মাংস খাওয়ার ফলে এলার্জি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট ওষুধ সেবন করুন। তখন এলার্জিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

লেখক : ডা. জাহেদ পারভেজ, (সহকারী অধ্যাপক) ত্বক, চর্ম যৌন ও ট্রান্সপ্ল্যন্ট সার্জারী বিভাগ) শহীদ সরওয়ারার্দী হাসপাতাল। ডা. জাহেদ'স এন্ড স্কিনিক, হাসপাতাল। গ্রীন রোড,পান্থপথ মোড়, ঢাকা। ০১৫৬৭-৮৪-৫৪-১৯

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়