যেসব লক্ষ্য নিয়ে ঢাকার ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা

নিউজ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ রাত ০৮:৪১, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি, আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি, সমুদ্র নিরাপত্তা অর্জন, শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ, সংঘবদ্ধ আন্তঃদেশীয় অপরাধ প্রতিরোধ…

বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে এখন আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বা আইপিএস। আর এ কৌশলে বাংলাদেশকে পাশে পেতে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপানসহ শক্তিশালী কয়েকটি রাষ্ট্র। তবে বিপরীতে রয়েছে বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী রাষ্ট্র চীন। বাংলাদেশ যেন আইপিএস’র সঙ্গে যুক্ত না হয় বন্ধুরাষ্ট্র চীনের সেই চেষ্টা প্রকাশ্য। এসব দ্বৈরথ থেকে বাঁচতেই নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল তৈরির আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও পশ্চিমের প্রভাবশালী রাষ্ট্র ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফরের ঠিক আগের দিনই ঘোষণা করা হয় ঢাকার নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বা 'আইপিএস আউটলুক'। ২৪ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ রূপরেখা ঘোষণা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। চারটি মৌলিক নীতিমালার ওপর প্রণীত এ রূপরেখায় ১৫টি অভিলক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

রূপরেখায় চারটি মৌলিক নীতিমালার প্রথমটি হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’।

দ্বিতীয়টি- বাংলাদেশ সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ, যেখানে জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার, সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য অবিরাম প্রয়াস অব্যাহত রাখা।

তৃতীয়টি হলো- সমুদ্র আইন সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদ, ১৯৮২-সহ প্রযোজ্য জাতিসংঘ চুক্তিগুলো এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনগুলো মেনে চলা হবে।  

চতুর্থ নীতিমালায় বলা হয়- টেকসই উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক কার্যক্রম এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে গঠনমূলক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা।

এছাড়া ১৫টি উদ্দেশ্য অর্জনের কথাও বলা হয়েছে রূপরেখায়। এর মধ্যে রয়েছে- বাণিজ্য-বিনিয়োগ বৃদ্ধি, আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি, সমুদ্র নিরাপত্তা অর্জন, শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ, সংঘবদ্ধ আন্তঃদেশীয় অপরাধ প্রতিরোধ, শান্তির সংস্কৃতি অর্জন, সমুদ্রসম্পদ রক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, সাইবার সিকিউরিটিসহ আরও কয়েকটি বিষয়।

এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশ এখন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এখন বাংলাদেশকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তই যেন নিতে পারছে না বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলো। এমতাবস্থায় ঢাকার নিজস্ব ‘ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল’ ঘোষণা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কেননা এই অঞ্চলে যে পরাশক্তিগুলোর জোট হচ্ছে এর ভবিষ্যৎ গড়াচ্ছে যুদ্ধের দিকে। ঠিক এমন সময় এই পদক্ষেপ নিয়ে মূলত অত্যন্ত সুকৌশলে বিশ্বকে শান্তির বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।
 

দিনবদলবিডি/Rakib

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়