ঢাকায় নতুন ভবনে পানি-গ্যাস–বিদ্যুৎ পেতে মানতে হবে যে শর্ত

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:০৭, সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২, ৩ শ্রাবণ ১৪২৯
রাজউক

রাজউক

ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুয়ায়ী, কোনো ভবন নির্মাণ করতে প্রথমে রাজউক থেকে…

রাজধানী ঢাকায় নির্মিত কোনো ভবনে পানি-গ্যাস-বিদ্যুতের মতো জরুরি পরিষেবা পেতে হলে ভবনের বসবাস বা ব্যবহার সনদ দেখাতে হবে। এ শর্ত পূরণ ছাড়া কোনো ভবনে নাগরিক পরিষেবা ও ভবনমালিককে ব্যাংকঋণ না দিতে ঢাকা ওয়াসা, ডেসকো, তিতাসসহ সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

ঢাকা মহানগর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুয়ায়ী, কোনো ভবন নির্মাণ করতে প্রথমে রাজউক থেকে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও পরে নির্মাণের অনুমোদন নিতে হয়। নির্মাণকাজ আংশিক বা পুরোপুরি শেষ করার পর এটি ব্যবহার করতে চাইলে ভবনমালিককে রাজউক থেকে বসবাস বা ব্যবহার সনদের (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর সংশ্লিষ্ট ভবন পরিদর্শন করে নির্মাণের ক্ষেত্রে অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় পাওয়া গেলে সনদ দেওয়া হবে না। প্রতিটি সনদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষে সনদ আবার নবায়ন করতে হবে।

রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নকশার বাইরে গিয়ে ভবন নির্মাণের সংখ্যা কমানো যেত। রাজউক কড়াকড়ি আরোপ না করায় এত দিন সেটির বাস্তবায়ন হয়নি। এখন বিধি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা চাইছে রাজউক।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে চার হাজার ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে রাজউক। এ হিসাবে গত ১৫ বছরে রাজউকের আওতাধীন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন, সাভার, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে অন্তত ৬০ হাজার ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব ভবনের মধ্যে মাত্র ৩০০টির মতো ভবনের মালিক বসবাস বা ব্যবহারের সনদ নিয়েছেন।

রাজউকের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-২) বেগম তানজিলা খানম গণমাধ্যমকে বলেন, ৩০০টি সনদের প্রায় সব কটিই রাজধানীর উত্তরা, গুলশান ও বনানী- এই তিন এলাকা থেকে নেওয়া হয়েছে। সব ভবনমালিকই যাতে সনদটি নেন, সে জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, সংস্থাটির পরিচালক (প্রশাসন) মুহম্মদ কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠি গত মাসে সংস্থাগুলোর কাছে ডাকযোগে পাঠানো হয়। চিঠি দেওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ডেসকো, ডিপিডিসি, ঢাকা ওয়াসা, তিতাসের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র; গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার রেজিস্ট্রার; ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও দুটি বেসরকারি আবাসন প্রতিষ্ঠানকে এসব চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে দেওয়া চিঠিতে বসবাস বা ব্যবহার সনদ ছাড়া সিটি কর্পোরেশন থেকে ভবনের হোল্ডিং নম্বর, ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য সেবা না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইভাবে ঢাকা ওয়াসা, ডেসকো, ডিপিডিসি, তিতাসের মতো সংস্থাগুলোকে বসবাস বা ব্যবহার সনদ ছাড়া ‘ইউটিলিটি সেবা’ না দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে ভবনের বিপরীতে আর্থিক সেবা (ব্যাংকঋণ) দেওয়ার আগে এ সনদ দেখতে বলা হয়েছে।

রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা গণমাধ্যমকে বলেন, নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কেউ যাতে ভবন নির্মাণ না করেন, সে জন্য বসবাস বা ব্যবহার সনদ নিতে বলা হয়েছে। এটি নিশ্চিত করতেই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পেয়ে সংস্থাগুলো কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সে সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে চিঠি দেওয়ার পর বসবাস সনদ নেওয়ার হার বেড়েছে বলে তিনি জানান।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়