পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে লিঙ্গ পরিবর্তন, হলো না শেষ রক্ষা
দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
লিঙ্গ পরিবর্তন করেও হয়নি শেষ রক্ষা! ধরা পড়েছেন গোয়েন্দা জালে। বেশি বেতনে কুয়েতে পাঠানোর নামে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রটির মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দারা বলছেন, এদের মধ্যে দু'জন আছেন ট্রান্সজেন্ডার। প্রতারণা করে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতেই মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর হয়েছেন।
বাগেরহাটের মনির হাওলাদার। দুই ভাগ্নে এবং চার খালাতো ভাইয়ের কুয়েতে যাওয়ার জন্য একজনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন সাড়ে ১৪ লাখ টাকা। ভিসাসহ অন্যান্য কাগজপত্র যথাসময়ে হাতে পাওয়ার পর জানতে পারেন সব নকল। ততক্ষণে লাপাত্তা কথিত এজেন্সি।
ভুক্তভোগী মনির হাওলাদার বলেন, আমি এখন খুব অসহায়। এরপরে আমি খুব অসুস্থ হয়ে গেছি। এই টাকাটা যাতে আমি আইনের মাধ্যমে ফেরত পেতে পারি- এটাই আমার দাবি।'
মনির হাওলাদারের মত এমন প্রতারণার শিকার অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। যাদের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে আল সাফার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে সময় সংবাদে খবর প্রচারের পর চক্রটিকে গ্রেফতারে অভিযানে নামে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মূলহোতাসহ তিনজনকে।
গ্রেফতার তিনজনের একজন শরীফুল ইসলাম চক্রটির প্রধান। ২০১৭ সাল থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা করে আসছিলো শরীফুলের চক্রটি। বাকি দুজন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এরা একসময় মেয়ে ছিলেন।
এদের মধ্যে আবরার জাওয়ার ওরফে তন্ময় প্রকাশ ওরফে রেজাউল করিমের আসল নাম হৃদি মাহজাবিন। বিয়ে হয়েছিলো। আছে সন্তানও। একবার জেলে গিয়ে জামিনে বের হয়ে দ্বিতীয় বার আবারও প্রতারণার মামলায় কারাভোগ করেন। পরে ভারতে গিয়ে অপারেশন করে ট্রান্সজেন্ডারে পরিণত হন। একই কাজ করেছেন আহিয়ান শিশির ওরফে কামরুজ্জামান শিশির।
পুলিশ বলছে, চক্রটি কুয়েতে লোক পাঠানোর নামে জাল ভিসা, ভুয়া ট্রেনিং, নকল বিএমইটি কার্ড এমনকি বিমান টিকেটও জাল করতেন।
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কুয়েতে লোক পাঠানোর কথা বলে তারা অরিজিন্যাল ভিসা থেকে তারা তথ্য নেয়। যাত্রীরা যখন তাদের কাছে আসে তখন তারা বিএমইটির নকল একটা কার্ড বানায়।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলছেন, এই চক্রে তাদের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারি জড়িত নন। তিনি বলেন, কিছু অপরাধী নকর কার্ড তৈরি করছেন। তারা সার্ভারে প্রবেশ না করেই এটা করছে।
বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি হাতিয়ে নেয়া চক্রটির আরও অনেকেরই নাম পেয়েছে ডিবি।
দিনবদলবিডি/এমআর