ভারতীয় মিডিয়ার বিশ্লেষণ: 'জি-২০' কি বদলে দিলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ!
নিউজ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
‘জি-২০’ মঞ্চে মিলে গেল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হাসিনা-বাইডেনকে এক ফ্রেমে এনে সব রাগ-ক্ষোভ মিটিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। এ যেন নির্বাচনের আগে হাতে চাঁদ পেলো শাসকদল।
জোটে না থাকলেও জি-২০ সম্মেলনে বিশ্বমঞ্চে নতুন রূপ পেলো বাংলাদেশ। ভারতের আমন্ত্রণে নয়াদিল্লি গিয়ে বিশ্বনেতাদের মধ্যমণি হয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। একমঞ্চে পেয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানান অনেকেই। এরপরই দেশের রাজনীতিতে শুরু হয় নতুন হিসাব-নিকাশ। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমেও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে ‘জি-২০’ রাজনৈতিক সমীকরণই বদলে দিয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। 'জি-২০' সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম কলকাতা’।
এবারের জি-২০ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র অতিথি রাষ্ট্র ছিল বাংলাদেশ। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শক্তিধর সবকটি রাষ্ট্রপ্রধানের সামনে শেখ হাসিনার সম্মান আরও বাড়িয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রমাণ করেছেন প্রতিবেশী দেশটির গুরুত্বও। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশকে রেখেছেন একই কাতারে। সবমিলিয়ে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীনদের জন্য এই সম্মেলন ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই নাক গলাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মোড়লরা। কিন্তু এই সম্মেলনে অংশ নেয়ায় পাল্টে গেল সব দৃশ্যপট।
প্রথম কলকাতা’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের নির্বাচনের বাকি আর মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন মাস। এই মুহূর্তে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে হাসিনা-মোদি বৈঠক। এছাড়া ‘জি-২০’ মঞ্চে মিলে গেল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হাসিনা-বাইডেনকে এক ফ্রেমে এনে সব রাগ-ক্ষোভ মিটিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। এ যেন নির্বাচনের আগে হাতে চাঁদ পেলো শাসকদল। একই সঙ্গে গোটা আন্তর্জাতিক দিক থেকেও সফলতা নিয়ে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু নির্বাচন ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর ভিসানীতিসহ জোরালো চাপ দিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। কিন্তু জি-২০ সম্মেলনের পর বিদেশিদের কোনো ধরনের হুঁশিয়ারি শুনতে হবে না ক্ষমতাসীন সরকারকে। চোখ রাঙাতে দেখা যাবে না যুক্তরাষ্ট্রকেও। কেননা নিজ বাসভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসু আলোচনা করেছেন মোদি। বাইডেনের সঙ্গেও হয়েছেন মুখোমুখি। এত কিছুর পরও বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা কি সত্যি পাল্টাবে নাকি আগের মতোই থাকবে; এমন প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জি-২০ সম্মেলন এক নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফর বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক দিক বয়ে এনেছে। কেননা জি-২০ জোটে থাকা শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চ ভাগ করে নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। অর্থনীতি কিংবা বাণিজ্যেও জেগেছে নতুন সম্ভাবনা। সব মিলিয়ে তার এই সফরে ‘গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্সে’ নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীন সরকারের সম্পর্ক কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।
দিনবদলবিডি/Mamun