বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং ফৌজদারি অপরাধ: ইউজিসি
দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং হবে একটা সময়ে এটা কল্পনাতীত ছিলো। এখন সংবাদপত্রে র্যাগিংয়ের খবর প্রায়শ প্রকাশিত হচ্ছে। এটা দুঃখজনক ও বর্বোরোচিত ঘটনা। ২০ থেকে ২৫ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন র্যাগিং ছিল না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহমর্মিতা ও সৌজন্যবোধ ছিল। ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকতো। বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তবুদ্ধি চর্চার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান।
শিক্ষাঙ্গণে র্যাগিং বা বুলিং বর্বর ফৌজদারি অপরাধ। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোন মূল্যে র্যাগিংয়ের মতো বর্বর কর্মকাণ্ড বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যদের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর।
বৃহস্পতিবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তথ্য অধিকার ও কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত এক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। ইউজিসি অডিটরিয়ামে এই প্রশিক্ষণ হয়।
অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, র্যাগিংয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিক্ষর্থীরা যেন সুন্দর ও চমৎকার পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দিতে হবে।
মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং হবে একটা সময়ে এটা কল্পনাতীত ছিলো। এখন সংবাদপত্রে র্যাগিংয়ের খবর প্রায়শ প্রকাশিত হচ্ছে। এটা দুঃখজনক ও বর্বোরোচিত ঘটনা। ২০ থেকে ২৫ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন র্যাগিং ছিল না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহমর্মিতা ও সৌজন্যবোধ ছিল। ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকতো। বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তবুদ্ধি চর্চার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান। ক্যাম্পাসে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং বন্ধে ইউজিসি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।
উপাচার্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থীদের প্রবেশ শুরু হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রোভোস্ট, প্রক্টর ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যেন সুদৃষ্টি দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি র্যাগিং, নিপীড়ন ও নির্যাতন ঘটনার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে যেত এবং এর ব্যবস্থা নিতো তাহলে আবরার ও ফুলপরির মতো ঘটনা ঘটত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইউজিসি এ সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সজাগ থাকা এবং র্যাগিং বিরোধী প্রদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। র্যাগিংয়ে যুক্ত ব্যক্তিরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক প্রতিভাবান, সৃজনশীল ও নান্দনিক। তারা সবসময় র্যাগিং বর্বরতার বিরুদ্ধে। তাই, শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং চিরতরে বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তথ্য গোপনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষার্থীর কণ্ঠস্বর যাতে প্রতিফলিত হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্পর্শকাতার জায়গা, কাজেই এখানে এমন পরিবেশে তৈরি করতে হবে যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে।
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, তথ্য অধিকার আইন দেশের একমাত্র আইন যেখানে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে এই তথ্য না দিলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও আইনে বলা আছে। তিনি ব্যতিক্রমী বিষয় ছাড়া সব তথ্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রশিক্ষণে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অধিকার আইনের ফোকাল পয়েন্ট ও ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অংশ নেয়। কমিশনের জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক শামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরেদৌস জামান।
দিনবদলবিডি/Nasim