মার্কিন সংস্থা সিআইএ থেকে এনইডি : ভিনদেশে জাতীয় নির্বাচনে হস্তক্ষেপই যার উদ্দেশ্য !

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:০৮, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১৩ আশ্বিন ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হয়েও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে অনেকটাই নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট। সুষ্ঠু নির্বাচনের দোহাই দিয়ে প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করছে পরাশক্তি এই দেশটি। কখনো প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা, কখনো বা ভিসানীতির মতো কঠোরতা আরোপ করে কর্তৃত্ব জানান দিচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে নিজেদের স্বার্থ হাসিল। তবে হস্তক্ষেপের বিষয়টি বাংলাদেশেই প্রথম নয়, তথ্যমতে বিশ্বের বহু দেশে এমন নজির রয়েছে। বলা চলে, অর্ধশত বছরে ভিনদেশের ৮১টি জাতীয় নির্বাচনে সরাসরি যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

ভিন দেশের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষপাতমূলক হস্তক্ষেপ নিয়ে একটি বই লেখেন হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক অধ্যাপক ডভ এইচ লেভিন। ‘Meddling in the Ballot Box: The Causes and Effects of Partisan Electoral Interventions’ নামের বইটি ২০২০ সালে প্রকাশ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পরের বছর তা জার্ভিস-শ্রোয়েডার বেস্ট বুক অ্যাওয়ার্ড পায়।

ডভ এইচ লেভিন তাঁর বইয়ে লিখেন, ১৯৪৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোতে মোট ৯৩৭টি জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৮১টি নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- কেনিয়া, ইতালি, জাপান, ইসরায়েল, লাওস, শ্রীলঙ্কা, চিলি ও ছোট্ট দ্বীপ রাষ্ট্র গায়ানা। গণতান্ত্রীক এসব দেশে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জয়ী করাই ছিল মার্কিন প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য। এ জন্য বেশ কিছু মার্কিন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বিদেশি রাষ্ট্রে হস্তক্ষেপের জন্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। 

এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি- (সিআইএ) ও ন্যাশনাল এন্ডোমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি- (এনইডি)। তারা এসব কাজে গোপনে টাকা ঢালতো বলেও বইতে উল্লেখ করেন ডভ এইচ লেভিন। বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে, কীভাবে এনইডি ও সিআইএ-কে কাজে লাগিয়ে চোখের সামনে গণতন্ত্রের নামে ভিনদেশে নাক গলিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

সেগুলো ছিল কভারড বা গোপনীয় অপারেশনের আদলে। সংস্থা দুটি সামরিক অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে শ্রমসংস্থাকে কাজে লাগিয়ে এসব কাজ বাস্তবায়ন করতো। এমনকি পছন্দের প্রার্থী ক্ষমতায় আসতে ব্যর্থ হলে নির্বাচিত রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে হত্যার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে বেশ শক্তভাবে ছিল বলে জানান ডভ এইচ লেভিন।

উল্লেখ্য, এনইডি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি একটি সংস্থা। ভিন দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ এবং মার্কিন স্বার্থ সংরক্ষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় সংস্থাটিকে।যেসব দেশে সিআইএ সরাসরি কাজ করতে পারেনা সেসব দেশে এনইডি কাজ করে থাকে। অনেক বছর ধরে তারা হোয়াইটহাউজ ও মার্কিন কংগ্রেসের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা পেয়ে আসছে। সে অর্থ ব্যয় করে তারা সংশ্লিষ্ট দেশ ও অঞ্চলে মার্কিন মূল্যবোধ প্রচার করে এবং বিচ্ছিন্নতা ও সংঘর্ষকে উস্কানি দেয়। বিশ্ববাসী ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে এনইডির বিরোধিতা ও অপছন্দের কথা প্রকাশ করেছে। ২০১৯ সালে চীন সরকার সংস্থাটিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।

দিনবদলবিডি/Enam

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়