জাতিসংঘের প্রতিবেদন: মার্কিন পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে বর্ণবাদ!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
প্রতিবেদনের প্রতিটি পৃষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ংকর বর্ণবাদের চিত্র উঠে এসেছে; যা নির্মম দাসপ্রথা, দাস ব্যবসা ও শত শত বছরের আইনসিদ্ধ বর্ণবাদের উত্তরাধিকারই বহন করে চলেছে।
বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র, মানবাধিকার নিয়ে বেশ সোচ্চার যে দেশটি, সেই যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ‘মানবাধিকার’ পরিস্থিতির নির্মম বাস্তবতা উঠে এসেছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, দেশটির পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে বর্ণবাদ।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর, প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ‘REPORT OF THE INTERNATIONAL INDEPENDENT EXPERT MECHANISM TO ADVANCE RACIAL JUSTICE AND EQUALITY IN LAW ENFORCEMENT’ (UNARC) প্রতিবেদনটিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে জাতিসংঘের বর্ণবাদবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের শিকার ১৩৩ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। তারা ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া, আটলান্টা, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, মিনিয়াপোলিস ও নিউ ইয়র্ক এ পাঁচ শহরের পাঁচটি বন্দিশিবির পরিদর্শন করেন। শুধু তাই নয়, ওই পাঁচ শহরের নাগরিক সমাজ, সরকার ও পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তারা।
বিশেষজ্ঞ দলের অন্যতম সদস্য ট্রেসি কিসি বলেন, ‘আমরা যেসব শহরে গেছি, সেখানে আমরা (বর্ণবাদের) কয়েক ডজন হৃদয়বিদারক কাহিনি শুনেছি। বর্ণবাদ একটি পদ্ধতিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা, যা পদ্ধতিগতভাবেই সমাধান করা দরকার।’
প্রতিবেদনের প্রতিটি পৃষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ংকর বর্ণবাদের চিত্র উঠে এসেছে; যা নির্মম দাসপ্রথা, দাস ব্যবসা ও শত শত বছরের আইনসিদ্ধ বর্ণবাদের উত্তরাধিকারই বহন করে চলেছে। এমনকি দাসপ্রথার বিলুপ্তির দেড় শ’ বছর পরও জাতিগত নিপীড়ন, পুলিশি হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন আজও ব্যাপকভাবে বিদ্যমান রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদের সবচেয়ে বড় শিকার আফ্রিকান বংশোদ্ভূত কৃষ্ণাঙ্গরা। শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গদের পুলিশের হাতে নিহত হওয়ার আশঙ্কা তিনগুণ বেশি এবং কারাবন্দি হওয়ার শঙ্কা ৪ দশমিক ৫ গুণ। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, প্রতি বছর পুলিশের হাতে এক হাজারেরও বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। বিচারের আওতায় আসে মাত্র ১ শতাংশ পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্রে শক্তি প্রয়োগের আইন বা বিধিবিধান আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংস্কার করা না হয়, তাহলে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকবে। হুমকির মুখে পড়বে দেশটির নাগরিকদের অধিকার এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও।
দিনবদলবিডি/এমআর