বিএনপি ছাড়া নির্বাচন করার সাধ্য কারো নাই: মির্জা আব্বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ রাত ০৯:৩১, বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২, ৫ শ্রাবণ ১৪২৯
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতু ও মেট্রো রেল প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'পদ্মায় না হয় বুঝলাম খরস্রোতা নদীতে পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়েছিল। ঢাকা শহরেও পাইলিংয়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে নাকি? আবার মেট্রো রেলের খরচ বেড়ে গেল।'

পদ্মা সেতু ও মেট্রো রেল প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'পদ্মায় না হয় বুঝলাম খরস্রোতা নদীতে পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়েছিল। ঢাকা শহরেও পাইলিংয়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে নাকি? আবার মেট্রো রেলের খরচ বেড়ে গেল।'

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আজ বুধবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।

সমাবেশে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, জাসাসের সদস্যসচিব জাকির হোসেন রোকন, বিএনপির  মহানগর নেতা ইউনূস মৃধা, ইশরাক হোসেন প্রমুখ।

মির্জা আব্বাস বলেন, 'নির্বাচন কমিশন বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে চেয়েছিল। আমরা সেখানে যাইনি কারণ, আমরা নির্বাচন কমিশন বুঝি না, নির্বাচন কমিশন চিনি না, মানি না। আমরা চাই, এই সরকার থাকবে না। সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা যাব।'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, 'সিইসি বলেছেন, বিএনপিকে বারবার ডাকব। আপনাকে সাধুবাদ জানাই। বারবার ডাকবেন এই কারণে যে, বিএনপিকে ছাড়া আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। বাংলাদেশে কারো সাধ্য নেই বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করা। এই ব্যর্থ, দুর্বৃত্ত সরকারকে আমরা কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেব না। আপনারা ক্ষমতা ছাড়েন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন। তারপর যদি ক্ষমতায় আসেন আপনাদের আমরা মাথায় তুলে নাচব। বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকবেন, এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনো মানবে না।'

মির্জা আব্বাস আরো বলেন, ‘কাদের সাহেব বলেন 'বিএনপি নির্বাচনে না এলে কিছু আসে-যায় না।’ সিইসি বলেন, 'বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না।' বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না; দেশের মানুষ বোঝে, আওয়ামী লীগ বোঝে, সিইসি বোঝে; কিন্তু এই সরকার বোঝে না। কারণ সরকার জানে নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই, নির্বাচন ছাড়াই তারা আবারও ক্ষমতায় আসবে।’

এই সরকারকে আর এ দেশের মানুষ চায় না মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমাদের যথাসময়ে পানিতে ডুবিয়ে মারা হচ্ছে, যথাসময়ে আবার তিস্তা ব্যারাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা একবার পানিতে ডুবে মরি, আবার খরায়। অথচ এই সরকারের কোনো কথাবার্তা নেই। '

এক-এগারোতে মাইনাস টু না, মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা করা হয়েছিল উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, 'এক-এগারোতে সবাই ভেবেছিল মাইনাস টু ফর্মুলা হয়েছে। মাইনাস টু না, আসলে মাইনাস ওয়ান। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার প্ল্যান ছিল। সেই প্ল্যান অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। '

বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমি কারাগারে ছিলাম। আরো অনেকে ছিল। আওয়ামী লীগের অনেকে লোক ছিল। কাদের সাহেবও ছিলেন। আমি কাদের সাহেব সম্পর্কে দু'কথা ১০ জায়গায় বলেছিলাম। যা বলি সত্যি বলি, মিথ্যা তো বলি না। মিথ্যা বলার অভ্যাস আমার নেই। কাদের সাহেব আর আমি পাশাপাশি থেকেছি। উনার সম্পর্কে দু-একটি কথা কি জানি না? বলতে কি পারি না? উনিও আমার সম্পর্কে বলতে পারবেন। এ জন্য অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। রাজনীতি করি, সহনশীল মনোভাব থাকতে হবে। আমি কারো কথা মানি বা না মানি, কথা বলার অধিকার তাকে দিতে হবে। '

কথা বলার অধিকার আছে বলেই তারেক রহমান সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলবেন, বাজে কথা বলবেন? প্রশ্ন রাখেন তিনি। তারেক রহমান সম্পর্কে মন্তব্য করায় ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, 'বলতে খারাপ লাগে, মুরাদ (সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী) যে অবস্থায়, কথাবার্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ওবায়দুল কাদের, আপনাদের কথাবার্তাও বন্ধ হয়ে যাবে। আপনাদের আর ছাড় দেওয়া হবে না। ' হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'ঢাকা শহরে আন্দোলনের যে জোয়ার উঠেছে, আগামী দিনে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সেই আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। '

সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, 'ইতিপূর্বে আপনারা বলেছেন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা নেই। এখন আবার পানির মূল্য বৃদ্ধি, তেলের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। অথচ আমরা যতটুকু জানি, সরকারি পর্যায়ে কখনো এসবের মূল্য বৃদ্ধি করা হয় না, বেসরকারি পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে মূল্য বৃদ্ধি করে। অথচ অনির্বাচিত এই সরকার সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি করছে।'

এ দেশের মানুষ আর এই সরকারকে চায় না মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস।

দিনবদলবিডি/এইচএআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়