পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় থানা চালু হচ্ছে ২১ জুন

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ রাত ১১:৩৪, রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২, ৫ আষাঢ় ১৪২৯
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় দুই পাড়ে দুই থানা চালু হচ্ছে। চারতলা দুটি নতুন নির্মিত থানা ভবন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হচ্ছে ২১ জুন। দুটি থানাই মূলত সেতুর নিরাপত্তা এবং এর সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের আইনী সহায়তার জন্য কাজ করবে।

সেতুর পাশাপাশি দুই পাড়ের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই দুই থানা। প্রতিটি থানায় একজন সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৪০ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকবেন। ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর ২৬ জুন থেকে সেতু দিয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই যানবাহন চলাচল করবে। সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে থানা দুটির পাশাপাশি সেতু এলাকায় থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা ফোর্স।

এর আগে এই দুই থানায় জনবলের পদ সৃষ্টি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অত্যাধুনিক এই থানা ভবন উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এখন। বাংলাদেশের সক্ষমতা আর এগিয়ে যাওয়ার স্মারক এখন পদ্মা সেতু। সেতু ঘিরে বদলে যাচ্ছে পুরো এলাকার চেহারা। সেতুর নিরাপত্তায় তাই চালু হচ্ছে দুইটি পূর্ণাঙ্গ থানা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২১ জুন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর দুই থানা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এরইমধ্যে থানা দুটিতে পর্যাপ্ত জনবল পদায়ন করা হয়েছে। এখন থানা দুটির উদ্বোধন ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাত্র ৪ দিন আগে থানার উদ্বোধন কেন্দ্র করে বিশেষ আবেগ বিরাজ করছে। নান্দনিক থানা ভবন দুটিকে ধোয়া মোছা করে প্রস্তুত করা হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া পদ্মা উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসাইন জানান, স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের দুই থানা পদ্মা পাড়ের মানুষের নিরাপত্তায়ও কাজ করবে। আধুনিক এই থানা দুইটি চালু হলে কমে যাবে এলাকার অপরাধ। সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা দক্ষিণ থানার আওতায় থাকবে পূর্ব নাওডোবা ও পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়ন। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা উত্তর থানার আওতায় থাকবে মেদিনীম-ল ও কুমারভোগ ইউনিয়ন। থানা চালুর খবরে স্থানীয়রা খুশি।

ওসি আলমগীর আরো বলেন ২১ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি পদ্মা উত্তর থানার উদ্বোধনের পরই আমরা আমাদের অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু করে দেব। এই সেতু উদ্বোধনের পর এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় কোন যাত্রী সমস্যার সম্মুখীন হলে তাৎক্ষণিক তাকে আইনী সহায়তার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া সেতুতে কারা যাতায়াত করছে সে বিষয়টিও সার্বক্ষণিক মনিটর করা হবে।

পদ্মা নদীর উভয় প্রান্তের এই এলাকা এক সময় বলতে গেলে জনশূন্য ছিল। কিন্তু এখন পদ্মা সেতুকে ঘিরে দুই পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে গেছে। নতুন নতুন জনবসতি তৈরি হচ্ছে, নতুন নতুন হাট-বাজার বসছে। মানুষজন এখানে বসবাস করতে শুরু করেছেন। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশের প্রশাসনিক কার্যক্রম দরকার ছিল। মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মেদেনীম-লে পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজার অদূরে এই থানা ভবন দেখে খুশি এলাকার মানুষজন।

মেদেনীম-ল এলাকার শেফালী বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় এমন থানা ভবন দেখে আমরা খুশি। কারণ, এখন এখানে মানুষজন বেড়েছে। এখানে থানা হলে সবার অনেক ভাল হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল থাকবে।

একই এলাকার সবুজ শেখ বলেন, এই পথে এখন লোকজন বাড়বে। ব্যবস্থা বাণিজ্য বাড়বে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় থানাটি খুব দরকার ছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সেতুর দুইপাশে দুই থানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সেতু সংশ্লিষ্ট যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম ঠেকাতে থানা দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পুলিশের নতুন থানাসমূহের যে টাইপ প্ল্যান রয়েছে সে প্ল্যান মোতাবেক জনগণকে সেবা দেয়াসহ সব সুযোগ-সুবিধা রেখেই থানা দু’টির নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। থানা উদ্বোধনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। বিশ্বজুড়ে আলোচিত এ পদ্মা সেতুর ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে নিরাপত্তা দিতে থানা দুটির গুরুত্ব বিবেচনা করে সেখানে জনবল নিয়োগ দেয়া হবে। নিরাপত্তায় থাকবে অত্যাধুনিক যানবাহন, আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্যান্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম। এছাড়া সেতুতে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা জোরদারে পদ্মা সেতু উত্তর এবং দক্ষিণ দুই পাশেই এই থানার দায়িত্বে থাকবে। এই দুটি থানার মূল দায়িত্বই থাকবে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করা। সেতুর আশপাশে বসবাসরতদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা। পাশাপাশি সেতুকেন্দ্রিক যেন কোন অরাজকতামূলক পরিস্থিতি তৈরি না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা।

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে প্রায় ছত্রিশ কোটি টাকা ব্যয়ে নান্দনিক থানা তৈরি করা হয়েছে। এক একর করে জমিসহ থানা ভবন দুটি পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ পুলিশ বিভাগকে হস্তান্তর করে ২০১৯ সালের মে মাসে।

দিনবদলবিডি/Md. Rahat Hossain

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়