বাংলাদেশে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ: কি বার্তা পেলো যুক্তরাষ্ট্র?
দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড ও যুক্তরাষ্ট্র আর্মির প্রথম স্পেশাল ফোর্সের যৌথ প্রশিক্ষণ-মহড়া অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারিত ছিল এবং তা অনুষ্ঠিত হয়। আর এমন পরিস্থিতিতির মাঝেই সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে রাশিয়ান যুদ্ধ জাহাজও।
হঠাৎ করে রাশিয়ার একটি নৌবহর বাংলাদেশে এসেছে। গত ১২ নভেম্বর, রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের তিনটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে। অন্তত ৫০ বছর পর রাশিয়ার কোনো যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়লো। যুক্তরাষ্ট্রের চিরশত্রু রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশে নোঙর ফেলায় কি বার্তা পেলো যুক্তরাষ্ট্র, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন রাশিয়া নয়, কৌশলে বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া বার্তা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশে প্রবেশের পরদিনই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড ও যুক্তরাষ্ট্র আর্মির প্রথম স্পেশাল ফোর্সের যৌথ প্রশিক্ষণ-মহড়া অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারিত ছিল এবং তা অনুষ্ঠিত হয়। আর এমন পরিস্থিতিতির মাঝেই সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করে রাশিয়ান যুদ্ধ জাহাজও।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর চট্টগ্রাম বন্দর মাইনমুক্ত করতে বিশেষ অভিযানে এসেছিল রাশিয়ার কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ। স্বাধীনতাযুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় অনেক মাইন ছিল। সেখানে অনেক নৌযান ডুবে ছিল। মাইন অপসারণে তখন অনেক দেশের কাছে সহায়তা চাওয়া হলে বিনা অর্থে শুধু সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেনি। তখন মানবিক কারণে সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল দেশটি। এতে একজন রুশ ডুবুরির মৃত্যুও হয়েছিল। তবে রাশিয়া শেষ পর্যন্ত মাইন অবসারণে সফল হয়েছিলো।
এদিকে, ৫০ বছর পর রুশ জাহাজ আবারও কেন বাংলাদেশে এলো এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বিশ্লেকরা বলছেন, রাশিয়ান যুদ্ধ জাহাজ এমন সময় বাংলাদেশে এসেছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ যেকোন বিষয়ে অযাচিত কথাবার্তা বলছে, যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।
মূলত রাশিয়ান যুদ্ধ জাহাজ বাংলাদেশে আগমনকে পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে এক ধরনের থ্রেট মনে করছেন বিশ্লেকরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার আগে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোকে একবার হলেও এখন ভাবতে হবে, কেননা বাংলাদেশ এখন এককভাবে কোনো দেশের ওপর নির্ভরশীল নয়। এছাড়া রুশ নৌ বহরের আগমনে এমন ইঙ্গিতও পাওয়া যায় যে বাংলাদেশের যেকোন প্রয়োজনে রাশিয়াকে সবার আগে পাশে পাবে বাংলাদেশ। নিজেদের স্বার্থে বিশ্বে এককভাবে আমেরিকা যে বলয় তেরি করেছিল, সেটি আর চলবে না এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
দিনবদলবিডি/এমআর