শ্রীপুরে ট্রেনের সঙ্গে বাসের ধাক্কা

মায়ের লাশের পাশে মা মা বলে ডাকছিল শিশুটি

গাজীপুর সংবাদদাতা || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:২৬, সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০২২, ১০ শ্রাবণ ১৪২৯
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চার বছর বয়সী ছেলে নূর মাহিমকে বাসায় রেখেই সকালে পোশাক কারখানার কাজে বেরিয়েছিলেন মা পিয়া আক্তার মিম (২৭)। ঘণ্টা চারেক পরই বাসায় ফেরে পিয়ার নিষ্প্রাণ দেহ।

চার বছর বয়সী ছেলে নূর মাহিমকে বাসায় রেখেই সকালে পোশাক কারখানার কাজে বেরিয়েছিলেন মা পিয়া আক্তার মিম (২৭)। ঘণ্টা চারেক পরই বাসায় ফেরে পিয়ার নিষ্প্রাণ দেহ। দাফনের আগে মাকে শেষবারের মতো দেখতে কাছে নিয়ে যাওয়া হয় মাহিমকে। মাটিতে পড়ে থাকা পিয়াকে দেখেই জড়িয়ে ধরতে চায় সে। মা মা বলে ডেকে যায় মাহিম, কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি অবুঝ শিশুটি।  

গাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রেন-বাসের সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের একজন ছিলেন পিয়া। ঘর থেকে বের হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই পিয়ার মৃত্যুসংবাদ পান তাঁর স্বজনরা। খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। সেই কান্নার শব্দেই ঘুম ভাঙে মাহিমের। ফ্যালফ্যাল করে সে কান্না দেখলেও মা হারানোর উপলব্ধি হয়ে ওঠেনি তার। কুমিল্লায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়িচালকের কাজ করা মাহিমের বাবা জুনায়েদ শুভ শুধু দেখেই গেছেন ছেলের মা মা ডাক। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা ছিল না তাঁর কাছে। শ্রীপুরের বালিয়াপাড়ায় নিহত পিয়ার বাসায় গিয়ে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।  

বালিয়াবাড়ায় শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন পিয়া। কর্মসূত্রে কুমিল্লায় থাকেন তাঁর স্বামী। পার্শ্ববর্তী টেপিরবাড়ী এলাকার জামান ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করতেন পিয়া। প্রতিদিনের মতো গতকালও বাসা থেকে খানিকটা হেঁটে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ায় ব্যবহৃত বাসে ওঠেন তিনি।  

সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাইজপাড়া লেভেলক্রসিংয়ে চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। এতে পিয়াসহ পাঁচজন নিহত হন।

নূর মাহিমের বড় চাচি নাসিমা বেগম জানান, দুর্ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পরই পিয়ার মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। মানবিক আবেদন করায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই জেলা প্রশাসন মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়। দাফনের আগে সন্ধ্যায় পিয়ার মরদেহের কাছে নেওয়া হয় মাহিমকে। মরদেহের সামনে তার মা মা ডাকার দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। রাতেই দাফন করা হয় পিয়ার মরদেহ।

দিনবদলবিডি/এইচএআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়