আমি হাফেজ না কিংবা মাদরাসাতেও পড়াশোনা করিনি। তবে কোরআন পড়তে পারতাম

হাতে পুরো কোরআন লিখলেন ঢাবি শিক্ষার্থী তাসনিম

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:০৭, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২, ৯ আষাঢ় ১৪২৯
জারিন তাসনিম দিয়া

জারিন তাসনিম দিয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৪-১৫ সেশনের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম দিয়া। মহামারি করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়ে পুরো কোরআন শরিফ হাতে লিখেছেন তিনি। তারপর সেই পাণ্ডুলিপি বাঁধাই করে রূপ দেন পূর্ণাঙ্গ কোরআনে। এখন দেশের ৫০০ মসজিদ-মাদরাসায় তিনি তার হস্তলিখিত কোরআন উপহার দিতে চান।

সোমবার (২০ জুন) সংবাদমাধ্যমকে জারিন জানিয়েছেন তার নিজ হাতে কোরআন লেখার পেছনের গল্প।

ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, ২০২০ সালের মার্চে যখন করোনার কারণে ঘরবন্দি হয়ে গেলাম, তখন ভাবলাম সময় কাটানোর জন্য একটা উদ্যোগ নিই। তখন এই কাজ শুরু করলাম। আমি যে শেষ করতে পারব এই উদ্দেশ্যে শুরু করিনি। আমি ভাবলাম যে, সিরিয়াল ধরে লিখি, যা পারি। কিন্তু এভাবে কখন যে ৫ পারা পর্যন্ত লেখা শেষ হয়ে গেল, আমি বুঝতে পারিনি। তখন তো বাইরে যাওয়া হয় না, বসে বসে প্রতিদিন লিখতে থাকি। এটার প্রতি এক প্রকার নেশা হয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, আমি হাফেজ না কিংবা মাদরাসাতেও পড়াশোনা করিনি। তবে কোরআন পড়তে পারতাম। আঙুল দিয়ে ধরে দেখে দেখে লিখতে দেড় বছর সময় লেগেছে। এরপর সেটা ডিজাইন করলাম এবং একজন হাফেজের সঙ্গে আলাপ করলাম কীভাবে, কী করা যায়। উনি বললেন, এটা খুবই ভালো কাজ হয়েছে। এরপর ৩০ জন হাফেজ আমার এই পাণ্ডুলিপি দেখেন। ৬৫১ পৃষ্ঠার এই কোরআন শরিফ উনারা দেড় মাস দেখে সংশোধন করে আমাকে দেন। তারপর উনাদের থেকে মতামত নিয়ে প্রিন্ট করি।

৫০০ কপি বিতরণের কথা জানিয়ে জারিন তাসনিম দিয়া বলেন, প্রথমে আমি এক কপি প্রিন্ট করি। তারপর আরো কয়েক কপি করি, আমার মা-বাবার হাতেও তুলে দিই, যেটি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এখন আমার চিন্তা-ভাবনা অন্তত ৫০০ কপি করে বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা এবং যারা নিয়মিত কোরআন পড়ে তাদের মাঝে বিতরণ করব, যাতে তারা পড়লে আমার সওয়াব হয়। আমাকে কেউ ভুলে গেলেও আমার এই কাজকে কেউ যেন ভুলে না যায়, এখানেই আমার স্বার্থকতা।

ঢাবির ফলিত গণিত বিভাগের এ শিক্ষার্থী আরো বলেন, আমি ছোট থেকে ইসলামি পরিবেশে বড় হয়ে উঠিনি। আমি স্কুল-কলেজে পড়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। সবার মতো সাধারণভাবেই পড়াশোনা করতাম। তবে আমি এই কাজটি যখন করে ফেলেছি এবং ইসলামের কিছু অর্থ যখন আমি বুঝেছি তখন অর্থসহ খতম করেছি। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব আমি চেষ্টা করছি ইসলামের বিধিনিষেধ মেনে চলতে এবং যতটুকু সম্ভব মেনে চলার চেষ্টা করব।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়