করোনার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের: জার্মান রাষ্ট্রদূত
দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি দেশের একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে আচিম ট্রস্টার বলেন, জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অত্যন্ত দৃশ্যমান। বাংলাদেশের যখন বিশ্ব মানচিত্রে আবির্ভাব ঘটেছিল, তখন দেশটি বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ভিক্ষ থেকে শুরু করে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা। এখন ৫০ বছর পর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের এখন অনেক উন্নত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা রয়েছে এবং দেশটি খাদ্য নিরাপত্তায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। এছাড়া আঞ্চলিক স্কেলে বাংলাদেশের অর্থনীতি চমৎকার অগ্রগতি করছে, প্রধানত মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে। প্রায় ৫ শতাংশ গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধিসহ দেশটির তরুণ এবং কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার কারণে দ্রুত অগ্রগতি বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, দেশজুড়ে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তাতে আগামী বছরগুলোতে দেশ বদলে যেতে বাধ্য।
প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্সের তথ্যমতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ নিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর মধ্যে জার্মানি ৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে, যার বেশির ভাগ টেক্সটাইল।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। ২০২০ সালে জার্মানি ৬ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে এবং মাত্র ৫৮৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির পূর্বাভাসে আমরা ভীষণ আশাবাদী, আগামী কয়েক বছরে জার্মানি থেকে বাংলাদেশের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে আচিম ট্রস্টার বলেন, বাংলাদেশ বিশেষ করে নবায়নযোগ্য শক্তি, পরিবহন, লজিস্টিক, হালকা প্রকৌশল, সামুদ্রিক ও খনিজ সম্পদ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করছে। দেশটি শীর্ষ জাহাজ নির্মাণকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি, যা বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণশিল্পের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক উন্নয়ন। এছাড়া বহিঃবাণিজ্যের ৯০ শতাংশরও বেশি সমুদ্রপথে।
দিনবদলবিডি/Md. Rahat Hossain