‘পাটকাঠিতে’ এখন নতুন অর্থনীতির হাতছানি

দিনবদলবিডি ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩৭, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৪ আশ্বিন ১৪২৯
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ফরিদপুর জেলায় ৮৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এ থেকে যে পরিমাণ পাটকাঠি পাওয়া যাবে তার বাজারমূল্য…

এক সময় রান্নার জ্বালানি হিসেবে, বাড়িঘর ও সবজি ক্ষেতের বেড়া, মাচা, পান বরজ তৈরিতে ব্যবহার হওয়া পাটকাঠি এখন আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে এই রুপালি কাঠি থেকে আয় ভালো হচ্ছে। বড় বড় কোম্পানির এজেন্ট এসে গ্রাম থেকে এটি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে সেই পাটকাঠিই রূপ নিয়েছে অর্থকরী পণ্যে।

পার্টিকেল বোর্ড ও চারকোল কারখানায় চাহিদা তুঙ্গে থাকায় রুপালি এ কাঠি রপ্তানি হচ্ছে চীনসহ বিভিন্ন দেশে।

এদিকে সোনালি আঁশে দেশ সেরা ফরিদপুর। এ জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্যও পাট। ফলে চলতি মৌসুমে ১৩০ কোটি টাকার বেশি আয় করবে জেলার চাষিরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাটকাঠি খুলে দিতে পারে অর্থনীতির নতুন দুয়ার।

জেলার সালথা, নগরকান্দা, বোয়ালমারীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়; পাট ও পাটকাঠি শুকিয়ে ঘরে তোলায় ব্যস্ত চাষিরা। যত্ন করে রাখা হচ্ছে পাটকাঠি।

সালথার গোট্রি ইউনিয়নের পাট চাষি ফিরোজ মোল্লা, হাবিবুর রহমান, সিরাজ প্রামাণিকসহ অনেকে বলেন, বর্তমানে আমরা ১০০ আঁটি কাঠির মূল্য পাচ্ছি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। যা গত বছরে ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তবে ১০০ কাঠিতে এক হাজার টাকা করে পেলে আঁশের লোকসান পুষিয়ে যেত বলে দাবি চাষিদের।

বোয়ালমারীর লংকারচার গ্রামের পাটকাঠি ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন শেখ জানান, এই মৌসুমে আমি দেড় থেকে দুই কোটি টাকার কাঠি কিনে পার্টিকেল বোর্ড তৈরির কারখানায় বিক্রয় করেছি। এখন অনেক ব্যবাসয়ী পাটকাঠি কিনছে। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিয়াউল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ফরিদপুরে চাষিরা পাটের আঁশ বিক্রি করে লাভ পায়নি, আশা করছি পাটকাঠিতে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।’

ফরিদপুর চেম্বার অব কর্মাসের প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চাষিদের রক্ষা করতে হলে পাটকাঠিতে দর দিতে হবে। যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান পাটকাঠির ব্যবহার করে তাদের আরো আন্তরিক হয়ে চাষিদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারগণমাধ্যমকে বলেন, ‘চীনসহ বিভিন্ন দেশে পাটকাঠি পুড়িয়ে পাওয়া কার্বন থেকে আতশবাজি, কার্বন পেপার, প্রিন্টার ও ফটোকপিয়ারের কালি, মোবাইলের ব্যাটারিসহ নানা পণ্য তৈরি করা হয়। এমনকি পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে সোনালি আঁশের রুপালি কাঠি। এ কারণে দেশে দেশে বাড়ছে এর চাহিদা।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ফরিদপুর জেলায় ৮৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এ থেকে যে পরিমাণ পাটকাঠি পাওয়া যাবে তার বাজারমূল্য ১৩০ কোটি টাকার বেশি।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়