‘শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন’, কারণ...

ধর্ম ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ১১:১৭, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৯
আমাদের উচিত, এ বরকতপূর্ণ দিনে বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা

আমাদের উচিত, এ বরকতপূর্ণ দিনে বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা

শুক্রবার দিনটিকে আরবিতে বলা হয় ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’। জাহিলি যুগে এ দিনটি ‘ইয়াওমুল আরুবাহ’ নামে পরিচিত ছিল। এর আরো নাম আছে। যেমন…

জুমার দিন উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ারার পক্ষ থেকে উপহারস্বরূপ। শুক্রবার দিনটিকে আরবিতে বলা হয় ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’। জাহিলি যুগে এ দিনটি ‘ইয়াওমুল আরুবাহ’ নামে পরিচিত ছিল। এর আরো নাম আছে।

যেমন- ১. সায়্যিদুল আইয়্যাম, ২. আফজালুল আইয়্যাম, ৩. ইয়াওমুল আজহার ও ৪. ইয়াওমুল আতিক।
তবে পবিত্র কোরআনে এ দিনটিকে ‘ইয়াওমুল জুমুআহ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এখানে জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশেষত্ব আলোচনা করা হলো-

আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার

আল্লাহ অন্য নবী-রাসূল ও তাঁদের উম্মতদের চেয়ে আমাদের উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এ দিনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে মনোনীত করেছেন। এ দিনের বিষয়ে রাসূল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনের ব্যাপারে আল্লাহ আমাদের পূর্ববর্তীদের পথভ্রষ্ট করেছেন। ইহুদিদের জন্য (শ্রেষ্ঠ দিন) শনিবার আর খ্রিস্টানদের জন্য রবিবার। কেয়ামতের দিন পর্যন্ত তারা হবে আমাদের পশ্চাদগামী। আমরা পৃথিবীর মধ্যে সর্বশেষ আগমনকারী; কিন্তু সৃষ্টিকুলের বিচার অনুষ্ঠানের দিক থেকে হব সর্বপ্রথম। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৩)।

কবরের আজাব লাঘব করা হয়

শুক্রবার মৃত্যুবরণ করা প্রকৃত মুসলিমের সৌভাগ্যের নিদর্শন। কেননা শুক্রবারের বরকতে এদিনে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি কবরের আজাব থেকে মুক্তি লাভ করেন। হাদিসের ভাষায়, জুমার দিনে অথবা রাতে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করে, তাহলে মহান আল্লাহ তাকে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৪)।

সগিরা গুনাহ মোচন করা হয়

কোনো মুসলিম যদি ৫ ওয়াক্ত নামাজ এবং জুমার নামাজ নিয়মিত আদায় করে আর কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে, তাহলে শুক্রবারের শ্রেষ্ঠত্বের কারণে ২ জুমার মধ্যবর্তী সব সগিরা গোনাহ মোচন করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)।

শুক্রবারের ৫টি বিশেষত্ব

স্রষ্টার পক্ষ থেকে শুক্রবার শুধু উপহারই নয়; বরং আল্লাহ তায়ালা দিনটিকে নানা বিশেষত্বে ভরপুর করে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) বলেছেন, ১. এদিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। ২. তাকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। ৩. এদিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৪. এদিনে এমন একটি সময় আছে (আসরের পর), এই সময়ে কেউ হারাম জিনিস ছাড়া অন্য কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা মঞ্জুর করেন। ৫. আর এদিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪)।

পরকালে অগ্রগামী হওয়ার নিদর্শন

কেয়ামতের দিন অন্য নবীদের উম্মতদের চেয়ে আমরা থাকব সর্বদিক থেকে অগ্রগামী। রাসূল (সা.) বলেছেন, আমরা সর্বশেষ উম্মত; কিন্তু কেয়ামতের দিন আমরা হব অগ্রগামী। যদিও সব উম্মতকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের আগে আর আমাদের দেওয়া হয়েছে সবার শেষে। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৬৩)।

সূরা কাহফ ২ জুমার জ্যোতি

আল্লাহ এদিনে আর একটি বিশেষ অফার দিয়েছেন সূরা কাহফের তেলাওয়াতের মধ্যে। যে ব্যক্তি বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সূরা কাহফ তেলাওয়াত করবে তার জন্য ২ জুমার মধ্যবর্তী সময়টি আলোকিত থাকবে। রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে; তার জন্য ২ জুমার মধ্যবর্তী সময় জ্যোতির্ময় হবে। (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৫৯৯৬)।

অতএব, আমাদের উচিত, এ বরকতপূর্ণ দিনে বেশি বেশি ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা।

ইয়া আল্লাহ! আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়