একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন বাবা-মেয়ে

টাঙ্গাইল সংবাদদাতা || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৩৭, শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

১৯৯৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন জয়নাল আবেদীন। তবে সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে তখন আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মনে মনে ইচ্ছা ছিল, সুযোগ পেলে আবার বই–খাতা নিয়ে পড়ার টেবিলে ফিরবেন…

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে একসঙ্গে এসএসসি পাস করেছেন বাবা ও মেয়ে। তারা উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের ফুলমালীর চালা গ্রামের বাসিন্দা। মেয়ের সঙ্গে বাবার এই সাফল্যে গ্রামের সবাই বেশ খুশি হয়েছেন।

ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ৪৪ বছর বয়সী জয়নাল আবেদীন। তিনি জিপিএ ৪ দশমিক ৮৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। জয়নাল আবেদীনের দুই মেয়ে জেসমিন আক্তার ও আছিয়া ফুলমালীর চালা ছাকেদ আলী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। জেসমিন (২২) জিপিএ ৩ দশমিক ৩৩ পেয়েছে। তবে আছিয়া (১৮) অকৃতকার্য হয়েছেন।

জয়নাল আবেদীন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি স্থানীয় বাজারে ক্রোরারিজ ও হার্ডওয়্যার সামগ্রীর দোকান করেন। জয়নালের পাঁচ ছেলে-মেয়ে সবাই পড়াশোনা করে। একমাত্র ছেলে রুহুল আমিন স্থানীয় রাশেদ মডেল স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এবং অন্য দুই মেয়ে বর্ষা একই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও সুমাইয়া অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

জেসমিন আক্তার বলেন, তার বাবা দীর্ঘদিন পড়াশোনার বাইরে ছিলেন। তবে এই বয়সে তিনি আবার পড়াশোনা শুরু করে ভালো ফল করেছেন। তার বাবার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক রয়েছে বলেই এমন ফলাফল সম্ভব হয়েছে। এই সাফল্যে পরিবারের সবাই খুশি। তবে ছোট বোন অকৃতকার্য হওয়ায় কিছুটা মন খারাপ বলে জানান তিনি।

১৯৯৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন জয়নাল আবেদীন। তবে সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে তখন আর পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মনে মনে ইচ্ছা ছিল, সুযোগ পেলে আবার বই–খাতা নিয়ে পড়ার টেবিলে ফিরবেন। অবশেষে ২০২০ সালে ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখার পোলট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং ট্রেড শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। এরপর দুই মেয়ের সঙ্গে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।

জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ও বড় মেয়েটা পাস করেছি। কিন্তু ছোট মেয়েটা ফেল করায় মন খারাপ লাগছে। 

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়