একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম: আইসিইউর সাপোর্ট না পেয়ে শিশুর মৃত্যু

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:১০, রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ১ মাঘ ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

মাদারীপুরের শিবচরে একসঙ্গে ৩ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন পিংকি আক্তার নামের এক গৃহবধূ। তবে শারিরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় জন্মের পর থেকেই ৪ সন্তানকে আইসিইউতে চিকিৎসকের নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়। কিন্তু আইসিইউতে রেখে চিকিৎসার টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছিল দরিদ্র কৃষক বাবা আনোয়ার শিকদার। তাই ৪ সন্তানের মধ্যে ২ জনকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে বাধ্য হয় পরিবার। তবে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর তাদের এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ৩ সন্তানকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের সকলের সহযোগিতা চান আনোয়ার।

 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার সন্নাসীরচর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের পিংকি আক্তারের সঙ্গে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের বেপারীকান্দি ক্লাব বাজার গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার শিকদারের বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় ২ বছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এরপর তাদের আর কোনো সন্তান না হওয়ায় চিকিৎসকের কাছে যান তারা। একটি ছেলের আশায় এই দরিদ্র দম্পতি দীর্ঘদিন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করেন। বিয়ের প্রায় ৭ বছর পর দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হন গৃহবধূ পিংকি। গত ৭ জানুয়ারি সকালে পিংকির প্রসব বেদনা উঠলে প্রথমে তাকে পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সেখান থেকে তাকে ওইদিনই দুপুরে ঢাকার মগবাজারের আদ দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওইদিনই রাত আনুমানিক ৮ টায় সিজারের মাধ্যমে ৩ মেয়ে ও ১ ছেলের জন্ম দেন পিংকি আক্তার।

এক সঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম হওয়ায় বাবা-মাসহ আত্বীয়-স্বজন সকলেই মহাখুশি। তবে জন্ম হওয়ার পর পরই শিশুগুলোর শারিরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় রাত ১ টায় চিকিৎসকরা শিশুগুলোকে আইসিইউতে নিয়ে রাখেন। তবে প্রতিদিন হাসপাতালের চিকিৎসা খরচসহ প্রায় ৭০ হাজার টাকার জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছিল আনোয়ার। আত্বীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে ঋন করেও এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত টাকার অভাবে গত ১২ জানুয়ারি ২ মেয়ে সন্তানকে আইসিইউ থেকে বের করে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাকি ২ সন্তান ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তবুও প্রতিদিন তাকে গুনতে হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া ২ সন্তানের মধ্যে আজ ভোরে এক সন্তানের মৃত্যু হয়। বাকি এক সন্তান এখনো গ্রামের বাড়িতে রয়েছে। আর চিকিৎসকের পরামর্শে বর্তমানে এক সন্তান আইসিইউতে আর এক সন্তান তার মায়ের কাছে বেডে রয়েছে।

আনোয়ার শিকদার বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে একসঙ্গে ৩ মেয়ে ও এক ছেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু জন্মের পরই ওদের আইসিইউতে রাখা হয়। তবে টাকা জোগাতে না পেরে দুই মেয়েকে আইসিইউ থেকে বের করে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। এতে হাসপাতালের খরচও অনেক কমে গেছে। কিন্তু বাড়িতে পাঠানো দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। কি আর করার ছিল আমার। মন চাইছিল না মেয়েদের বাড়ি পাঠাতে কিন্তু টাকার অভাবে বাধ্য হয়েই বাড়ি পাঠিয়েছিলাম। এখন আমার বাকি ৩ সন্তানকে বাঁচাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের সহযোগিতা চাই।’

সন্তানদের বাঁচাতে আনোয়ার সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। তাকে সহযোগিতা করতে ০১৭৭৯৩৫৬২১৮ এই নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

দিনবদলবিডি/Anamul

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়