অনিরাপদ খাবার খেয়ে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি গুনছে বাংলাদেশ!
দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
সুস্থ ও সুন্দর থাকতে সারা পৃথিবীই এখন নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে সচেতন। তাই শুধু ক্ষুধা নিবারণ নয়, প্রয়োজনীয় পুষ্টিসমৃদ্ধ ও রাসায়নিকমুক্ত খাদ্য উৎপাদনের তাগিদ এখন বিশ্বজুড়ে।কেননা নিরাপদ খাদ্যের অভাবেই প্রতিবছর মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
নিরাপদ খাদ্য নিয়ে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে গবেষণা করেছে বিশ্বব্যাংক। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দেশের মানুষ অনিরাপদ বা বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ করেন তাদের উৎপাদনশীলতা কম। উন্নত দেশগুলোর মানুষ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মানুষের চেয়ে কম খাদ্য গ্রহণ করেও তাদের গড় উৎপাদনশীলতা বেশি।
বিশ্বব্যাংকের ‘দ্য সেফ ফুড ইমপারেটিভ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ফলে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিনিয়তই উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে। আর্থিকভাবে হিসাব করলে যার মূল্য দেড় বিলিয়ন ডলার। টাকার অঙ্কে ১২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, শুধু নিরাপদ খাদ্য খেলেই বাংলাদেশের মানুষ জিডিপিতে আরও ১২ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে পারতো।অথচ খাদ্য গ্রহণে সচেতন হলেই এই আর্থিক ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
আশার কথা হচ্ছে, ইতোমধ্যে নিরাপদ খাদ্যের কথা ভাবছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। তারা বিষ বা রাসায়নিক প্রয়োগ না করে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে উদ্যোগী হচ্ছেন। এমন উদ্যোগ দেশের কৃষিতে আরও সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।
দেশে প্রথমবারের মতো ময়মনসিংহের ত্রিশালের সেনবাড়িতে তিনটি বিশাল গ্লাস হাউসে গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির কৃষি ব্যবস্থাপনা। ৬৬ হাজার স্কয়ার ফুট এলাকাজুড়ে তিনটি গ্লাস হাউসে জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বিভিন্ন সবজির চাষ হচ্ছে।
এছাড়া অনেকেই গড়ে তুলেছেন ভার্টিক্যাল ফার্ম। পরিমিত আলো ও তাপের জন্য ব্যবহার হচ্ছে বিশেষায়িত এলইডি আলো। অর্থাৎ ঘরের ভিতর হাইড্রোপনিক সিস্টেমে ভার্টিক্যাল ফার্মিংয়ে উৎপাদন হচ্ছে লেটুস, বক চয়, বেসিল, সেলারি, ক্যাপসিকাম, চেরি টমেটোসহ বেশ কয়েক রকমের সালাদ ও সবজি ফসল। এ আয়োজন উন্নত বিশ্বের সর্বাধুনিক কৃষি আয়োজনগুলোর মতোই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের একটি বড় হাতিয়ার হলো কৃষি। এই কৃষির ফলন নিরাপদ হলে যেমন হাজার কোটি টাকার উৎপাদনশীলতা বাড়বে, তেমনই বাংলাদেশের জন্য বিশ্ববাজারে বিশাল একটি বাণিজ্যিক সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে। কাজেই আসন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের কৃষিকে এখনই সঠিক পথে আনতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
দিনবদলবিডি/Rakib