ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা উৎসব স্পেনের

দু’দলই প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে অংশ নেয়। তাই নতুন চ্যাম্পিয়ন মিলছে– সেটা আগেই জানা ছিল। তবে সম্ভাবনার মাপকাঠিতে অনেকটা এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড, বাস্তবে হলো তার উল্টো। ১-০ গোলে হেরে চোখের জলে বিদায় নিতে হলো ইংলিশদের। আর জমিয়ে শিরোপা উৎসব করল স্পেন। ছেলেদের পর এবার স্প্যানিশ মেয়েরাও করল বিশ্বজয়। নারীদের বিশ্বকাপে শিরোপা হাতে নেওয়া দেশের সংখ্যাও বেশি নয়, স্পেনসহ পাঁচটি। সবচেয়ে বেশি চারবার বিশ্বকাপ জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার তারা কূল খুঁজে পায়নি। দুটি শিরোপা আছে জার্মানির শোকেসে। বাকি দুটি দল জাপান ও নরওয়ে একবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়। সে ক্ষেত্রে পঞ্চম বিশ্বকাপজয়ী দল হিসেবে ফিফার চ্যাম্পিয়ন খাতায় নাম ওঠাল স্পেন।

২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনাল; জোহানেসবার্গের সকার সিটি স্টেডিয়ামে ৮৪ হাজারের বেশি দর্শক। মাঠে শিরোপার লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডস ও স্পেন। ৯০ মিনিট পেরিয়ে যাওয়া ম্যাচে গোলের দেখা নেই। সবাই ধরে নেয় টাইব্রেকারেই গড়াবে ম্যাচটি। কিন্তু বিধাতার চিত্রনাট্য পাল্টানোর সাধ্য কার! ১১৬তম মিনিটে স্পেনের ফুটবলপাগল মানুষের জন্য দেবদূতের মতো হাজির হন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। দারুণ এক গোলে মাতিয়ে তোলেন পুরো গ্যালারি। জার্সি খুলে করেন উদযাপন। তাঁর জার্সির নিচে লেখা ছিল কিছু কথা, যা নিয়ে পরে বেশ আলোচনা চলে।

গতকাল সিডনির অলিম্পিক স্টেডিয়ামে যেন তারই খানিক প্রতিচ্ছ্ববি। ৭৫ হাজার দর্শকের সামনে সমানতালে লড়ে স্পেন ও ইংল্যান্ড। কিন্তু এবার আর শত মিনিট অপেক্ষা করতে হয়নি। ২৯ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় স্প্যানিশরা। ইংলিশদের জালে বল জড়িয়ে অনেকটা ইনিয়েস্তার মতো করেই উদযাপন সেরে নেন ওলগা কারমোনা। এরপর অবশ্য ব্যবধান বাড়ানোরও সুযোগ পায় স্পেন। কিন্তু ৬৯তম মিনিটে জেনিফার হারমোচের পেনাল্টি আটকে দেন ইংলিশ গোলকিপার ম্যারি। তাতে গোল আর না বাড়লেও ১-০ ব্যবধানে ম্যাচটা জিতে নেয় স্পেন।

স্পেনের জন্য জয়টা একদিকে পুরোনো হিসাব মেটানোরও। গত বছর ইউরোতে বেশ সম্ভাবনা নিয়ে যাত্রা করেছিল দলটি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়ে থ্রি লায়ন্সের মুখে পড়ে তারা। যে ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে নেয় ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ইউরোর শিরোপাও যায় ইংলিশদের ঘরে। এবার সেই হিসাবনিকাশ মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজান স্পেনের কোচ হোর্হে রদ্রিগেজ, যার শতভাগ আদায় করে নেন খেলোয়াড়রা। ২৯ মিনিটে এক গোলে এগিয়ে থাকার পর ইংল্যান্ড বেশ কয়েকটি সুযোগ পায়। কিন্তু কিছুতেই স্প্যানিশ রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। তাই ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ-দুঃখটা থেকেই গেল। সেই ১৯৬৬-এর পর দ্বিতীয় স্টার দেখেনি পুরুষ ফুটবল দল। এবার মেয়েদের ফাইনালে তাকিয়ে ছিলেন দেশটির ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু তারাও পারেননি আক্ষেপটা ঘোচাতে। চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা নিয়ে আরাধ্যের শিরোপার পাশ দিয়ে মাথা নুইয়ে নিতে হলো বিদায়।

ফুটবল বিশ্বকাপ বিভাগের সব খবর