চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা জাতিসংঘের

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:৫৮, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১৩ ফাল্গুন ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস চলমান বৈশ্বিক সংঘাত, আর্থিক, জ্বালানি ও খাদ্য সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে উদ্ভুত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২৪ ফেব্রুয়ারি অপরাহ্নে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মহাসচিব এমন মন্তব্য করেন।

এই প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন’ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সার ও শস্য আমদানির মাধ্যমে তাদের খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সহায়তা করে। গুতেরেস জানান, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসের সারের কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে যা বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যে আমদানির কথা বিবেচনা করতে পারে। মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করবে। এ সময় ড. মোমেন বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার টেকনোলজিকে দ্বন্দ্ব-সংঘাত থেকে গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনকারি দেশসমূহে ব্যবহারের আহবান জানান।

ড. মোমেন মহাসচিবকে জানান, পোস্ট-কনফ্লিক্ট বিভিন্ন দেশে ভোটার আইডি তো দূরের কথা সঠিক একটি তালিকাও নেই। নির্বাচন কমিশন নাই। আমাদের এক্সপার্টদের সেসব দেশে দিতে পারি। ইতিমধ্যেই আমরা দ্বন্দ্ব-সংঘাত থেকে বেড়িয়ে আসা অনেক দেশেই লিগ্যাল এক্সপার্ট পাঠিয়েছি। 
ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ভোট জালিয়াতি ঠেকাতে আমরা বায়ো-মেট্রিক ভোটার লিস্ট অর্থাৎ ফটো আইডি তৈরী করেছি। ট্র্যান্সপ্যারেন্ট ব্যালট বাক্স তৈরী করেছি। আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি, নির্বাচনের সময় তারাই সবকিছুর দায়িত্ব পালন করবেন অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সক্ষম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে। মহাসচিব গভীর মনোযোগ দিয়ে এ প্রস্তাব শোনেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারন উন্নয়নের গতিধারার প্রশংসা করে মহাসচিব কামনা করেন, বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে বিশেষ করে এসডিজি অর্জনে আরও সাফল্য অর্জন করবে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের ধারাবাহিক নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন তিনি।

সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের ওপর গৃহীত রেজ্যুলেশনের পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সংকট এবং এর সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়েও আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মহাসচিব। তারা এই সংকট সমাধানে আসিয়ানের কার্যকর নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই প্রেক্ষিতে মহাসচিব ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

মহাসচিবের সাথে সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরেসি ডিপার্টমেন্ট অব পিসবিল্ডিং অ্যান্ড পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স (ডিপিপিএ)-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো এবং পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁপিয়েরে ল্যাক্রুয়া এর সাথেও বৈঠক করেন।

সাধারণ পরিষদের সভাপতির সাথে বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকগুলোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতও ছিলেন ।

দিনবদলবিডি/Rakib

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়