বইমেলায় প্রকাশিত নতুন বই ৩৭৩০টি, বিক্রি ৪৭ কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৪৪, বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩, ১৬ ফাল্গুন ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারির পর আনন্দ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত এবারের মাসব্যাপী একুশে বইমেলা মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। এবার মেলার মূল প্রতিপাদ্য ছিলো ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এবার ২৭ফেব্রুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর ৩ হাজার ৪১৬টি নতুন বই বের হয়েছিলো। অনেক প্রকাশক তাদের নতুন সব বইয়ের তথ্য না দেওয়ায় মেলায় প্রকৃতপক্ষে কত নতুন বই এসেছে এই তথ্য পাওয়া যায়নি। নিবন্ধনকৃত মোট মোড়ক উন্মোচিত বইয়ের সংখ্যা ৭২২টি। এর বাইরেও অনেকে স্টল বা মেলার অন্য স্থানে অনেক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এর সঠিক তথ্য জানা যায়নি।

বইমেলায় বাংলা একাডেমিসহ সব  প্রতিষ্ঠানের বই ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি হয়েছে। ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি মেলার মোট ৩১ দিনে ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। চলতি বছরে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৭ দিনে বাংলা একাডেমি ১ কোটি ২৪ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছে। ২০২২ অমর একুশে বই মেলায় ৫২ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিলো। এবার ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্টল মালিকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সম্ভাব্য বিক্রি যুক্ত করলে এবার প্রায় ৪৭ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে।

অন্যদিকে, মেলায় স্থাপনকৃত আর্চওয়ের পরিসংখ্যান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিলো  ৬৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬৩ জন।

একাডেমি সূত্র জানায়, অনুষ্ঠানে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২, কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ এবং অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষে বিভিন্ন গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ক্যারোলিন রাইট এবং জসিম মল্লিককে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২ এবং কবি মোহাম্মদ রফিক-কে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ দেওয়া হয়।

বইমেলা ২০২৩-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২২ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনীকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে আহমদ রফিক রচিত ‘বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুক্স, মোহাম্মদ হারুন-উর-রশিদ রচিত ‘বাংলা একাডেমি আমার বাংলা একাডেমি’ বইয়ের জন্য ঐতিহ্য এবং হাবিবুর রহমান রচিত ‘ঠার:বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-কে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খি-কে রোকনুুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৩ প্রদান করা হয়।

এছাড়া ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুথিনিলয় (প্যাভিলিয়ন), নবান্ন প্রকাশনী (২-৪ ইউনিট), উড়কি (১ ইউনিট) -কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়।

বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বইমেলা ২০২৩ এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পরপর ২ বার ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার সশরীরে ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলা ২০২৩ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ জন লেখকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এদিন বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনও করেন তিনি।

দিনবদলবিডি/Jannat

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়