চাঁদাবাজি ছেড়ে কৃষি কাজে করছে হিজড়ারা

গাজীপুর সংবাদদাতা || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৫২, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩, ১৪ চৈত্র ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

একসময় গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি ও মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা তুলতো একদল হিজড়া। এ দিয়েই কোনোরকমে চলত জীবন। কিন্তু তারাই নিজেরা এখন কৃষি কাজে ব্যস্ত। ক্ষেতে ফলাচ্ছে ধানসহ নানা সবজি। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ঘুচাতে চাচ্ছে সমাজে তাদের অপবাদ।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল এলাকার একদল হিজড়া পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে কৃষিকে। তারা এখন অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষসহ কৃষি ফসলের আবাদ করে সকলের নজর কেড়েছে।

চলতি বছরে তারা মহানগরীর বাইমাইল এলাকায় ১৩ বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন। এসব জমিতে ধান, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া,টমেটোসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যের আবাদ শুরু করেছেন। হিজড়ারা নিজেরাই ফসলের পরিচর্যা করছেন এবং পাশাপাশি দিনমজুর দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। এ ছাড়া তাদের বাড়িতে রয়েছে গরুর খামার।

এলাকাবাসী ও হিজড়ারা জানায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল বাঁশতলা এলাকায় ৩২ জনের একদল হিজড়া বসবাস করে। তারা বিভিন্ন দোকানপাট ও বাড়ি বাড়ি মানুষের কাছে চেয়ে টাকাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলত। এতে প্রায় মানুষও বিরক্ত হয়। আর এভাবে টাকা তোলাটাও তাদের বিবেকে বাধে। তাই তারা পেশা হিসেবে কৃষিকে বেছে নিয়েছে। সমাজের বিত্তবান মানুষের কৃষি জমি বর্গা নিয়ে সেখানে নতুন করে ফসলের আবাদ করছে।

হিজড়াদের দাবি সাধারণ মানুষের মতো তাদের হাত-পা আছে তারা সুস্থ পরিশ্রম করতে পারে। তাই তারা সাধারণ মানুষের মতো কর্ম করে চলতে চায়। এ জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা তাদের প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে তারা স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম করে জীবনযাপন করতে পারবে।

শিল্পী হিজড়া বলেন, দেশের মানুষ দেখুক। আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা কিছু করতে পারি। সমাজের মানুষ সুযোগ দিলে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি। সময় মতো ধান কাটতে পারলে নিজেদের চাহিদা পূরণ হয়েও বাজারে বিক্রি করতে পারব।

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সমাজের অবহেলিত হিজড়া সম্প্রদায় কৃষিকে পেশা হিসেবে নিয়েছে যা একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা কৃষকদের সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে থাকি। তবে এর জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হয়। তবে হিজড়ারা যোগাযোগ করলে আমরা সবার মতো তাদেরও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করবো। সমাজে তারা যেন স্বাভাবিক মানুষের মতো চলতে পারে এবং নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারে সে জন্য তাদের কৃষি সংশ্লিষ্ট সব রকম সহযোগিতা করা হবে।

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়