তাইওয়ান ‘ঝোড়ো সমুদ্রের’ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে : চীন

আন্তর্জাতিক সংবাদ || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৪৬, বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩, ২৯ চৈত্র ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

তাইওয়ান ‘ঝোড়ো সমুদ্রের’ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে চীন। এশিয়ার পরাশক্তি এই দেশটির দাবি, প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন তাইওয়ানকে ‘ঝোড়ো সমুদ্রের’ দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট সাইয়ের বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত সামরিক মহড়ার পর চীন এই মন্তব্য করল। বুধবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি গুয়াতেমালা ও বেলিজে সফর করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। যুক্তরাষ্ট্রে সফরের সময় তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় মার্কিন হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সাথে বৈঠকও করেন। সাই বলেছেন, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য তাইওয়ানের যে সংকল্প রয়েছে তা সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।

রয়টার্স বলছে, মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সাথে বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট সাই তাইপেই ফিরে আসার পর গত শনিবার চীন মহড়া শুরু করে। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে তাইওয়ান প্রণালীতে শুরু করা এই মহড়ায় তাইওয়ানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে নিশানা বানিয়ে হামলার অনুশীলন করে চীন।

চীন গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজস্ব এলাকা হিসেবে বিবেচনা করে এবং দ্বীপটিকে তার নিয়ন্ত্রণে আনতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাকে কখনোই ত্যাগ করেনি। তবে তাইওয়ানের সরকার চীনের এই দাবির বিরুদ্ধে বরারবই তীব্র আপত্তি জানিয়ে এসেছে।

অবশ্য প্রেসিডেন্ট সাইকে চীন বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসাবে দেখে থাকে এবং আলোচনার জন্য সাইয়ের কাছ থেকে বারবার আহ্বান জানানো হলেও বেইজিং তা প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। সাই বলেছেন, তিনি শান্তি চান কিন্তু তাইওয়ানে আক্রমণ হলে তার সরকার ভূখণ্ডকে রক্ষা করবে।

চীনের তাইওয়ান অ্যাফেয়ার্স অফিসের (টিএও) মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান বুধবার বলেছেন, ‘সাই ইং-ওয়েন তাইওয়ানের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে। তাইওয়ানকে ঝোড়ো সমুদ্রে ঠেলে প্রায় সম্পূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নিয়েছিল সাই ইং-ওয়েন।’

ঝু বলেছেন, ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং বহিরাগত শক্তির যোগসাজশ ও উস্কানির বিরুদ্ধে তাইওয়ানের চারপাশে অনুষ্ঠিত মহড়া (প্রতিপক্ষের জন্য) গুরুতর সতর্কতা।’

চীনের মহড়া শুরুর একদিন আগে তাইওয়ানে ফিরে আসা সাই অবশ্য বলেছেন, দ্বীপের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলা আগ্রাসীর বিরুদ্ধে বৈশ্বিক সমর্থন অর্জনের ক্ষেত্রে এই সফর সফল হয়েছে।

তাইপেইতে নিজের অফিসে কানাডিয়ান আইন প্রণেতাদের সাথে সাক্ষাতের সময় সাই বলেন, ‘এই সফরের মাধ্যমে আমরা আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি বার্তা পাঠিয়েছি। আর তা হলো- তাইওয়ান স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং এই কাজে আমাদের গণতান্ত্রিক অংশীদারদের কাছ থেকে স্বীকৃতি ও সমর্থন পেয়েছে তাইপেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘কানাডা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক অংশীদার। আমরা কানাডা এবং আরও অনেক সমমনা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে যৌথভাবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে ইচ্ছুক।’

এদিকে তিনদিনের সামরিক মহড়া গত সোমবার শেষ হলেও তাইওয়ানের আশপাশে এখনও সামরিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার সকালে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা তাইওয়ানের আশপাশে ৩৫টি চীনা সামরিক বিমান এবং আটটি নৌবাহিনীর জাহাজ শনাক্ত করেছে।

এই বিমানগুলোর মধ্যে ১৪টি তাইওয়ান প্রণালীর মাঝামাঝি রেখা অতিক্রম করে বলে মন্ত্রণালয়-প্রদত্ত মানচিত্রে দেখা গেছে; তাইওয়ান প্রণালীর মাঝামাঝি অবস্থিত এই রেখা সাধারণত দুই পক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক সীমানা হিসেবে কাজ করে।

অবশ্য চীন বলেছে, এই লাইন বা রেখার অস্তিত্ব তারা স্বীকার করে না

দিনবদলবিডি/Jannat

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়