দেশে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৭ হাজার ছাড়াল

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ১১:১৬, রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আট হাজার আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশের বিভিণ্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

২০০৩ সালে সারা দেশে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী ছিল ৩৮ হাজার ৪১২ জন। ২০১৩ সালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ২৮০।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ২০১৮ সালের পর থেকে আর্সেনিক রোগী শনাক্ত করা ও বিনা মূল্যে সেবা দেওয়ার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। সামনে এ প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) ২০১৯ সালের গুচ্ছ জরিপের তথ্যানুযায়ী দেশের ১১.৮ শতাংশ মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি রোগীপান করে। সেই হিসাবে প্রায় দুই কোটি মানুষ এই পানি পান করছে।

এই অবস্থার বিপরীতে একটি আশার তথ্যও আছে। দেশে গত ২০ বছরে ২১ শতাংশ নলকূপে আর্সেনিক কমেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অবশ্য গভীর নলকূপ বসানোর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ইতিবাচক ফল এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ডিপিএইচইর আওতায় পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বিধান চন্দ দে বলেন, ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫৪ জেলার মোট ৭২ লাখ নলকূপে আর্সেনিক স্ক্রিনিং করা হয়। এর মধ্যে ১৪ শতাংশ নলকূপে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। ২০০৩ সালে এই হার ছিল ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ ২০ বছরে ২১ শতাংশ নলকূপে আর্সেনিক কমেছে।

দেশের নলকূপে আর্সেনিকের মানমাত্রা নিয়ে ডিপিএইচইর সমীক্ষার তথ্য বলছে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে আর্সেনিকের হার সবচেয়ে বেশি। এখনো ২৫ শতাংশের বেশি আর্সেনিক পাওয়া যাচ্ছে চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর ও সাতক্ষীরা জেলার নলকূপগুলোতে।

বিধান চন্দ দে বলেন, দেশের মানুষ আগের চেয়ে অনেকটা সচেতন হয়েছে। তাই এখন অগভীর নলকূপের সংখ্যা কমছে। গভীর নলকূপ বসানোয় এলাকাভেদে কোথাও ৫৫০ ফুট, কোথাও ৭৫০ ফুট গভীর থেকে আর্সেনিকমুক্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব এলাকায় আর্সেনিকের মাত্রা বেশি, সেসব এলাকার মানুষের উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মেটাবোলিক সিনড্রোম, বুদ্ধিবৈকল্য ও অ্যাজমার প্রবণতা বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৬৩ সালে প্রতি লিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করে .০৫ মিলিগ্রাম। ১৯৯৩ সালে তা .০১ মিলিগ্রামে কমিয়ে আনা হয়। কিন্তু দেশে ১৯৬৩ সালের সেই মাত্রা আর পরিবর্তন করা হয়নি। সরকার নির্ধারিত মান অনুযায়ী, প্রতি লিটার পানিতে .০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে সেই পানি পান করা বা রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়