জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ১১:১২, বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২, ২৯ আষাঢ় ১৪২৯
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

রজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গুলিস্তানের বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মজীবীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় আসছেন। বিশেষ করে…

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। ঈদের সময় নাড়ির টানে যারা বাড়ি গিয়েছিলেন, জীবিকার তাগিদে তারা রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন। অনেকেই মঙ্গলবার (১২ জুলাই) কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।

ঈদের ছুটি শেষে ইতোমধ্যে ঢাকায় ফিরেছে সাড়ে চার লাখ মানুষ। মোবাইল ফোনের সিমের হিসাব দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

রজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গুলিস্তানের বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মজীবীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় আসছেন। বিশেষ করে যাদের ছুটি হয়েছে, তারা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরছেন। এ নিয়ে কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলেন, এভাবে তিন দিনের জন্য বাড়িতে গিয়ে কষ্ট আরও বাড়ে। রেল ও নৌপথেও অনেকে ঢাকায় ফিরছেন।

গাবতলীর বাস টার্মিনালের হানিফ পরিবহনের কাউন্টারের তত্ত্বাবধায়ক মো. রনি জানান, সোমবার রাত থেকে তাদের ঢাকায় ফেরা গাড়িগুলো যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। একই ধরনের তথ্য জানিয়েছেন শ্যামলী পরিবহনের সমীরণ রায়।

সায়েদাবাদে সুগন্ধা পরিবহনে টিকিট বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, দক্ষিণ বঙ্গের যাত্রী পরিবহন করছেন তারা। সকালে ঢাকায় আসা যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে।

সোহাগ পরিবহনের আবু হেনা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে আসা তাদের পরিবহনগুলো পূর্ণ যাত্রী নিয়ে এসেছে।

মহাখালীর বাস টার্মিনালে থাকা এনা পরিবহনের কাউন্টারের তত্ত্বাবধায়ক জানান, উত্তরবঙ্গ থেকে তাদের ছেড়ে আসা গাড়িগুলোতে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে চাকরিজীবী যাত্রীদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি মনে হয়েছে।

বগুড়া থেকে ঢাকায় আসা ব্যাংকার আব্দুর রহমান জানান, ছুটি শেষ হওয়ায় ঈদের পরদিনই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে এখন শুরু হবে কর্মব্যস্ততা। এইতো জীবন আমাদের, প্রতিবারই এমন হয়। এসব এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।

বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকায় ফেরা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী বাসেত মিয়া জানান, চার দিন ছুটি পেয়েছিলেন, যা গতকাল শেষ হয়েছে। সে জন্য গতকাল সন্ধ্যায় বরিশাল থেকে লঞ্চে ওঠে সকালে ঢাকায় পৌঁছান।

মঙ্গলবার অফিস-আদালত খুললেও রাজধানীর রাস্তাগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। বিভিন্ন জেলা থেকে দূরপাল্লার বাসগুলো যাত্রী নিয়ে রাজধানীতে আসে। এসব বাসের অর্ধেক আসন ছিল ফাঁকা।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার ঈদের ছুটি অন্যান্য বছরের তুলনায় কম ছিল। ঈদের পরে নির্ধারিত ছুটি ছাড়া সাপ্তাহিক বা অন্য কোনো সরকারি ছুটি নেই। তাই অনেকে আজ মঙ্গলবার ঢাকায় ফিরছেন।

সদরঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই যাত্রীদের পদচারণায় সদরঘাট আগের রূপে ফিরতে শুরু করেছে। এদিন ভোর থেকেই বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, চরফ্যাশন, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া, লালমোহনসহ দেশের বিভিন্ন রুটের যাত্রীবোঝাই লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টার্মিনালে লঞ্চ ও যাত্রী বাড়তে থাকে। অনেকেই ঘাটে নেমে সরাসরি রওনা করেছেন কর্মস্থলে।

একই সময়ে অনেক লঞ্চ চলে আসায় টার্মিনালের অতিরিক্ত চাপ কমাতে বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তাদের বার বার মাইকিং করে দ্রুত যাত্রী নামিয়ে টার্মিনাল ছাড়ার নির্দেশ দিতে শোনা গেছে। যাতে ঘাটে আসা অন্য লঞ্চগুলোও যাত্রীদের নিরাপদে নামাতে পারে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর ভাষ্য, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত দুদিনে ৬৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৬৬ জন মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। ঢাকার বাইরে যাওয়া সিমের হিসাব দিয়ে গত রবিবার রাতে ফেসবুকে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়