কম খরচে লাভ বেশি, দিনাজপুরে বাড়ছে বস্তায় আদা চাষ

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:১১, শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

তুলনামূলক কম খরচ ও লাভ বেশি হওয়ায় সাধারণ নিয়মের বাইরে বস্তায় আদা চাষ বিভিন্ন এলাকায় সাড়া ফেলেছে। দিনাজপুরের সদর, ঘোড়াঘাট, চিরিরবন্দর, খানসামাসহ বিভিন্ন উপজেলায় বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়েছেন কৃষক।

 

যাদের চাষের জমি নেই তারা বাড়ির আশপাশে বা আঙিনায় কিংবা গাছতলায়, বাড়ির আঙিনায়, অন্যান্য ফসলের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে বস্তায় আদা চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। বস্তায় আদা চাষ করলে গাছে তেমন কোনো রোগ বালাই হয় না, সার, কীটনাশক কম লাগে, পরিশ্রম কম, পরিচর্যা সহজ হয়। গাছ হৃষ্টপুষ্ট থাকে। পতিত ও গাছের তলা এমনকি বাঁশতলার নিচে, পরিত্যক্ত জমিসহ বসতবাড়ির উঠানে আদা চাষে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। তুলনামূলকভাবে কম পরিশ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আদা চাষে ঝুঁকছেন কৃষক। তাই দিনাজপুরে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বস্তায় আদা চাষ।

ঘোড়াঘাট কুলানন্দপুর সিআইজি কৃষক দলের মোঃ রুবেল সরকার জানান, বর্তমান আদার বাজারে দাম বেশি হওয়ার কারণে সিআইজি কৃষকদলের ৩০জন সদস্য নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটাতে এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে আদা চাষে আগ্রহী হন। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা খরিপ-১ মৌসুমে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করি। বর্তমানে পরিপূর্ণভাবে বেড়েছে আদার গাছ। এই পদ্ধতিতে আমরা বস্তা প্রতি ২-৩ টি আদা বীজ হিসেবে ব্যবহার করি। তিনি আরো বলেন, এক শতাংশ জমির জন্য ৪-৫ কেজি আদার বীজ প্রয়োজন হয়। আর একটি গাছ থেকে আড়াই কেজি বা তার চেয়ে বেশি আদা পাওয়া যায়। 
আদা প্রাকৃতিক ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন। আদা লাগানোর ৯ থেকে ১০ মাসের মধ্যে উত্তোলন করা যায়। বস্তায় আদা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন চিরিরবন্দরের ভূষিরবন্দর বৈকুণ্ঠপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর আবদুল মান্নান সরকার। তিনি গত বছর পরীক্ষামূলক বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়ায় এবছর ১২০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। এছাড়াও চিরিরবন্দর উপজেলার নশরৎপুর, সাতনলা,বাসুদেবপুর, বিন্যাকুড়িসহ বিভিন্ন গ্রামের শৌখিন চাষিরা বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, এটি একটি বিকল্প পদ্ধতি। যেখানে মাটি ভালো নেই, কিংবা সংকট রয়েছে, সেখানে এটি কার্যকর। অনেকে এখন ছাদে বস্তায় ভরে আদা চাষ করছেন। যাদের চাষাবাদের জমি নেই, তাদের বাড়ির অব্যবহৃত জায়গায় বা বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এতে অল্প খরচে চাষি বেশি লাভবান হতে পারছেন।

ঘোড়াঘাটে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসেন জানান, আদা চাষে তেমন পরিশ্রম করতে হয় না। বেলে দোআঁশ মাটিতে আদা চাষের জন্য উপযোগী। জমি প্রস্তুত করার সময় মাটিতে সার দিতে হয়। আর কোন সার দিতে হয় না। বর্ষা মৌসুমে ছত্রাক আক্রমণ করার সম্ভাবনা থাকে তাই এ সময়ে ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হয়। আর তেমন কোন পরিশ্রম নেই।

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রফিকুজ্জামান জানান, কুলানন্দপুর সিআইজি কৃষক দলের সদস্যরা স্ব-উদ্যোগে ১ হাজার ৬শ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কারিগরি পরামর্শ দিয়ে আসছি। এছাড়াও পরিত্যক্ত জমি ও বসত বাড়ির উঠানে আরও ৫ হেক্টর জমিতে আদার চাষ করেছে।

দিনবদলবিডি/Rakib

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়