মুসলমানদের জন্য নুহ (আ.)-এর বিখ্যাত দোয়া

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:৪১, রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

হজরত নুহ (আ.)-কে আদমে সানি বা দ্বিতীয় আদম বলা হয়। তিনি যখন তাঁর উম্মতকে এক আল্লাহর দিকে আহ্বান করতেন, তারা তাঁর কথাকে হেসে উড়িয়ে দিত। নবীকে অসম্মান ও অপমান করতে নিজেদের কানে হাত দিয়ে রাখত। আল্লাহর এই নবী সাড়ে ৯০০ বছর তাঁর উম্মতকে দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু তারা সত্যধর্ম থেকে বিমুখ ছিল এবং কুফুরিতে লিপ্ত ছিল।

এক সময় নুহ (আ.) সীমালঙ্ঘনকারী উম্মতের ওপর চরম বিরক্ত হলেন এবং আল্লাহর কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন। পবিত্র কোরআনে ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে এভাবে- ‘নুহ আমাকে বলল, হে আমার মালিক, আমি আমার জাতিকে দিবস রজনীতে, কালে-বিকালে সাড়ে নয়শ’ বছর দাওয়াত দিয়েছি। তারা আমার শোনেনি, বরং শিরক ও কুফুরিতে লিপ্ত থেকেছে। যতই দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছি, তাদের অবাধ্যতার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। এবার আমি বলছি, আপনি তাদের নির্মূল করে দিন। আজাব পাঠিয়ে ধ্বংস করে দিন। নতুবা এরা এতই খারাপ হয়ে গেছে যে, নিজেরা তো হেদায়াত পাবেই না, বরং এদের থেকে জন্ম নেওয়া পরবর্তী প্রজন্মও কাফের মুশরিকই হবে। (ভাবার্থ সুরা নুহ: ২৬-২৭)


এরপর কওমে নুহকে আল্লাহ তাআলা বন্যা দিয়ে ধ্বংস করে দেন। এক কথায়, সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে দেন। কেবল একটি নৌযানে অল্প কিছু ঈমানদার হজরত নুহ (আ.) এর সঙ্গে ছিল। তারা দুনিয়াতে থেকে যায়। এসময় তিনি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপনকারী ও সত্য ধর্ম অবলম্বনকারী মুমিন ও মা-বাবার জন্য একটি দোয়া করেন। যে দোয়াটি ইমামরা মোনাজাতে নিয়মিত করেন, মুমিনরা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য করে থাকেন এবং অবিশ্বাসী জালেমদের বিরুদ্ধে সহায়তার জন্য মুসলমানরা করে থাকেন।

বিখ্যাত সেই দোয়াটি হলো- رَبِّ اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِوَالِدَیَّ وَ لِمَنۡ دَخَلَ بَیۡتِیَ مُؤۡمِنًا وَّ لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ ؕ وَ لَا تَزِدِ الظّٰلِمِیۡنَ اِلَّا تَبَارًا উচ্চারণ: রব্বিগ ফিরলী ওয়ালিওয়া-লিদায়্যা ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মু’মিনাও ওয়ালিল মু’মিনা-তি ওয়ালা তাযিদি জ্ব-লিমীনা ইল্লা তাবা-রা।’ অর্থ: ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি জালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ: ২৮)


আল্লাহ তাআলা হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া কবুল করে তাঁর উম্মতের সকল কাফেরকে শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দেন। কিন্তু মুসলমানদের মাফ করে দেওয়ার প্রার্থনা রয়েছে ওই দোয়ায়। তা কি কবুল হয়েছে? এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কাফেরদের ব্যাপারে হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন, তাই মুসলমানদের সম্পর্কে তিনি যে দোয়া বলেছেন আল্লাহ তা কবুল করেননি এমনটা সম্ভব নয়। (খাজানে নুহ: ৪/৩১৪-৩১৫, আদদাকির: ১২৮৬, শুয়াবুল ঈমান: ৯৫৯৬)

দিনবদলবিডি/Mamun

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়