অভিভাবকরা অসন্তুষ্ট কেন নতুন শিক্ষাক্রমে?

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:৩৭, রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষার চেয়ে ব্যবহারিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যার ফলে পড়ার চেয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক নানান কাজের চাপ বেড়েছে, যা অনেক অভিভাবকের ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এর ব্যাখ্যায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, শিক্ষার্থীদের আনন্দময় পরিবেশে পড়ানোর পাশাপাশি মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে দক্ষতা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে শেখাতেই নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু করা হচ্ছে।

 


 

শিক্ষা ব্যবস্থা রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে শিক্ষার্থীকে দক্ষ করে তুলতে উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন শুরু হয় ২০২২ সালে।

প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর শিক্ষাবিদদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে এসে অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা হতে দেখা যাচ্ছে।

নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণির আগের সব পাবলিক পরীক্ষা তুলে দেওয়া হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাব পদ্ধতিতেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। এছাড়া থাকছে না নবম শ্রেণিতে বিভাগ পছন্দের সুযোগ। এর বদলে একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পছন্দমতো বিভাগে পড়তে পারবেন।

মূলত শিক্ষার্থীদের আনন্দময় পরিবেশে পড়ানোর পাশাপাশি মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে দক্ষতা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে শেখাতেই নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।

নতুন শিক্ষাক্রমে অভিভাবকরা অসন্তুষ্ট কেন?

নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষার চেয়ে ব্যবহারিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যার ফলে পড়ার চেয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক নানান কাজের চাপ বেড়েছে, যা অনেক অভিভাবকের ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সাথে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের কম্পিটিশনেরও কোনো সুযোগ নেই। ফলে মাপকাঠির বিবেচনা ও উৎসাহ না থাকায় শক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়ারও শঙ্কা থাকবে।

এছাড়া, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল, সেটি না নিয়েই কাজ শুরু করেছে সরকার, এমনটাও অভিযোগ করছেন কেউ কেউ।

সমাধান কি?

বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে বিভিন্ন ধাপে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ চলছে। কিন্তু প্রস্তুতিপর্ব শেষ হবার আগেই শিকক্ষকদের প্রশিক্ষণের কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যার মাধ্যমে আংশিক ও ভুল মেসেজ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আমরা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই কাজ শুরু করেছি।

এগুলো সম্পন্ন হলেই সব ধোঁয়াশা কেটে যাবে। তারপরও যেসব সমালোচনা হচ্ছে, সেগুলো আমরা বিবেচনা করছি। পরবর্তীতে প্রয়োজন মনে করলে কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হবে। আপাতত ছেলে-মেয়েরা নতুন শিক্ষাক্রমেই পড়বে। যুগের সাথে তাল মেলাতে এর কোনও বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এতদিন যে শিক্ষাক্রম চালু ছিল, মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সেটিতে পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমে সেই জায়গা থেকে সরে আসা হয়েছে। এখন পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর শিখনকালীন মূল্যায়ন বা ধারাবাহিক মূল্যায়নকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী বছর বাস্তবায়ন করা হবে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে ধাপে ধাপে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

দিনবদলবিডি/Rakib

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়