শিশু বিক্রির অর্ডার নিয়ে অপহরণ করত তারা

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৪১, শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের ঘটকদের মতো নিঃসন্তান দম্পতির কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে চাহিদামতো শিশু চুরি করে বিক্রি করত। অপহরণের কাজটি করত সাইফুলের স্ত্রী নেহা।

রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে শিশু অপহরণের ঘটনায় এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) রমনা বিভাগ। অপহরণকারী এ স্বামী-স্ত্রী নিঃসন্তান দম্পতির কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে শিশু অপহরণের সুযোগ খুঁজত। পরে চাহিদামতো শিশু পেলে কৌশলে অপহরণ করে বিক্রি করে দিত তারা।

সম্প্রতি একই কায়দায় হাজারীবাগ থেকে আড়াই বছর বয়সী এক শিশুকে অপহরণ করে কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় নিয়ে বিক্রি করে দেয় তারা। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- অপহরণকারী সুলতানা আক্তার ওরফে নেহা, তার স্বামী শিশু বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম ও ক্রেতা মো. শাহজাহান।

হারুন অর রশীদ বলেন, হাজারীবাগ থানার নিউ মডেল টাউন এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম। পেশায় রিকশাচালক নুরুল দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করেন। ২১ মার্চ বাসার সামনে তার ছয় বছর বয়সী মেয়ে তাবাসসুম ও ছেলে তাহসিন খেলতে যায়। এ সময়ে শিশুদের নানি তাদের সঙ্গে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর একজন বোরকা পরা নারী বাসার সামনে এসে শিশুদের নানির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এরপর তাদের নানি বাচ্চাদের বাসার সামনে রেখে বাসায় চলে যান। এ সুযোগে ওই নারী শিশুদের ইশারা দিয়ে ডেকে নিয়ে দুজনকে চিপস কিনে দেয়। চিপস নিয়ে তাবাসসুম বাসায় ফিরে গেলেও তাহসিনকে নিজের কাছে রেখে দেয় ওই নারী। একপর্যায়ে ওই নারী তাহসিনকে কোলে নিয়ে ঝাউচর মেইন রোডের দিকে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে থানায় মামলা করেন। মামলাটির ছায়াতদন্তে নেমে অপহরণ চক্রটিকে শনাক্ত করেন ডিবির ধানমন্ডি জোনাল টিমের সদস্যরা। পরে এডিসি ফজলে এলাহীর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে লালমাইয়ের বড়তোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহজাহানের বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। তিনি ৫০ হাজার টাকায় শিশুটিকে সাইফুল-নেহা দম্পতির কাছ থেকে কিনেছিলেন। এর আগে এই দম্পতির কাছে তার জন্য একটি ছেলে শিশুর অর্ডার দিয়েছিলেন শাহজাহান।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের ঘটকদের মতো নিঃসন্তান দম্পতির কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে চাহিদামতো শিশু চুরি করে বিক্রি করত। অপহরণের কাজটি করত সাইফুলের স্ত্রী নেহা।

নিঃসন্তান দম্পতির উদ্দেশে হারুন বলেন, যাদের সন্তান নেই বা হয় না, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা সঠিক পদ্ধতিতে শিশু দত্তক নিন।

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়