ক্লাসে ফিরতে চায় কুবি শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতি ও প্রশাসনের দ্বন্দ্ব প্রায় আড়াই মাসের অধিক সময় ধরে চলমান। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের ফলাফল শেষে, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়। 

এরপর থেকে শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। সবশেষ গত ২৮ এপ্রিল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ফলে প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেয়।

অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। এমনকি আশঙ্কা করছে সেশন জটের। এরই ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- ‘অবিলম্বে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ক্লাস-পরীক্ষাসহ সবকিছু চালু করা, পরিবহন ব্যবস্থা চালু, শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউজিসি/সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত কমিটি গঠন করে সংকট সমাধান করা।

শনিবার (৪ মে) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিবের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে সকাল সাড়ে ১১টায় এই মানববন্ধন করেন তারা।

মানববন্ধনে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি গত ১৯ ফেব্রুয়ারির পর থেকে দফায় দফায় ক্লাস বর্জন করে আসছে। প্রায় ৪ দফায় শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করেছেন। তাদের দাবি এটা ন্যায্য আন্দোলন অথচ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করাটা যেমন অন্যায় তেমনি ভিসি স্যারের ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়াটাও অন্যায়। দুপক্ষের এই আন্দোলনের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তাদের সমস্যা অবশ্যই সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে।’

মানববন্ধনে সাধারণত শিক্ষার্থীদের পক্ষে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ বলেন, ‘শিক্ষক এবং উপাচার্য নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে তাদের ক্ষতির মুখে ফেলে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই নিম্নবিত্ত পরিবারের। অনেক শিক্ষার্থীরা টিউশন করিয়ে লেখাপড়ার খরচ চালায়। পরিবহন বন্ধ থাকায় টিউশন করানো কষ্টকর হয়ে গেছে।’

কাজী ফাহমিদা কানন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিস্থিতি চলছে তা খুবই লজ্জাজনক। এটা থেকে বের হয়ে আসতে চাই।’

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১ মে সাধারণ শিক্ষার্থীরা একটি মানববন্ধন করেছিল।