সেনাবাহিনীর অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কেএনএফ'র ভিন্ন কৌশল

নিউজ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:০২, সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

সেনা বাহিনীর নের্তৃত্বে যৌথ অভিযানে অনেকটাই কোণঠাসা কুকি চিনসহ পাহাড়ি  সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো।  তাই তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সফল অভিযানকে বিতর্কিত করতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচারকে কৌশল হিসেবে নিয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক ডাকাতিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়ে বান্দরবানসহ গোটা পাহাড়ি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয় এই স্শস্ত্র গ্রুপটি।

এরপর সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিছু হটতে বাধ্য হয় কুকিরা। ৩ এপ্রিল থেকে পার্বত্য অঞ্চলে চলা অভিযানে এ পর্যন্ত ৬ কুকি সন্ত্রাসী নিহত হয় আর গ্রেফতার হয় ৭৮ জন। সেনা অভিযানে কোণঠাসা হয়ে নিজেদের প্রতি সহানুভূতি আদায় ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচার করতে শুরু করে এই সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ।

কুকি চিনের মিথ্যাচার নতুন নয়:

একের পর এক মিথ্যাচার করে পাহাড়িসহ দেশের সব জনপদের মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে কুকি সন্ত্রাসীরা। সবশেষ তারা 'পঞ্চম শ্রেণীর ১৩ বছর বয়সী এক ছাত্রকে সেনারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে' বলে প্রচার করে।

নিজেদের ফেসবুক পেজের এক পোস্টে লিখেছে- ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রকে ধরে তার নাম ও স্কুলের নাম জানার পর গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। নিরপরাধ ছাত্রকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে হত্যা কাপুরুষের লক্ষন।’

এর আগে আরেকটি পোস্টে তারা লিখে ‘রাষ্ট্রের উদ্যোগে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান। অভিযানের ফলাফলঃ নিরপরাধ জনগণকে নির্যাতন, মা-শিশু ও বৃদ্ধ গ্রেপ্তার আর স্কুল পড়ুয়া ও কৃতি খেলোয়াড়দেরকে হত্যা করা। এই হচ্ছে দেশের অবস্থা!'

তারও আগে কেএনএফ‘র ফেসবুক পেজের পোস্টে বলা হয়, ‘অভিযানের নামে সেনাবাহিনী কেন এত ছাত্র এবং কৃতি সন্তানদের হত্যা করে কাপুরুষত্ব ও ব্যর্থতার পরিচয় দিল? সেনাবাহিনীর মধ্যে কি ভয়াবহ অভিশাপ আসতেছে?'

সশস্ত্র গোষ্ঠিটির লাগাতার এমন মনগড়া অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে মাঠে নামে একদল অনুসন্ধানি দল। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিপরীতে বাস্তব কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি অনুসন্ধানে।

সূত্রটির মতে ১৩ বছর বয়স দাবি করা পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রটির নাম ভানথাংপুই বম। তার বয়স ২৫ বছর। পঁচিশ বছরের যুবক কিভাবে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে? প্রকৃত যুবকের ছবি না দিয়ে যে শিশুর ছবি প্রকাশ করেছে, সেটিও ভুয়া। নিজেদের ফেসবুক পোস্টেযে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের ছবি।

এছাড়াও ৩০ কোটি টাকার যে প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে এমন কোন প্রকল্পের সন্ধানও মেলেনি। তবে পাহাড়ি জনপদ সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে পাহাড়ি সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের দমন করতে গিয়ে দেশ প্রেমিক দুই সেনা সদস্যের প্রাণহানিও ঘটেছে।

অভিযানকে ব্যর্থ দেখাতে বারবার ভুয়া ছবি ও তথ্য ব্যবহার করে লাগাতার অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে যাচ্ছে কুকিরা। কারণ অভিযানের পরপরই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পুরো তথ্য গণসমাধ্যমে প্রেরণ করে  আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সেনা বাহিনীর নের্তৃত্বে যৌথ অভিযানে অনেকটাই কোণঠাসা কুকি চিনসহ পাহাড়ি  সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো।  তাই তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সফল অভিযানকে বিতর্কিত করতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচারকে কৌশল হিসেবে নিয়েছে।

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পাহাড়ি জনপদে যেভাবে কেএনএফ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, এদের ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। এ ধরনের হামলা, পার্বত্য অঞ্চলের পরিবেশ পরিস্থিতিকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলবে। কেএনএফের তৎপরতা রোধে চলমান যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যাকফুটে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ তাদের কৌশল হিসেবে অপপ্রচার চালিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে জানান নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

দিনবদলবিডি/Hossain

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়