যেসব আলোচনা হয়েছে ঢাকা-নয়াদিল্লির বৈঠকে
দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ
গত রবিবার নয়াদিল্লিতে সপ্তম যৌথ পরামর্শক কমিশন (জেসিসি) বৈঠক করে বাংলাদেশ ও ভারত। বৈঠকে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সোমবার (২০ জুন) রাতে দিল্লি থেকে ঢাকায় ফেরার পর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকে আলোচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা পি কে হালদারের বিষয়ে আলোচনা করেছি। ভারত বলছে, লিগ্যাল প্রসেসের পর তাকে পাঠানো হবে।
গত ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগরের একটি বাড়ি থেকে আটক হন পি কে হালদার।
পদ্মা সেতুর জন্য ভারতের অভিনন্দন
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতুর জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত।
বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-নয়াদিল্লি
বৈশ্বিক সমস্যা নিরসনে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। তিনি বলেন, জেসিসি বৈঠকে বৈশ্বিক সমস্যার নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। অন্য জায়গায় সংঘাত হলে আমাদের ওপর কম প্রভাব পড়ে। আমরা এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো। এ অঞ্চলে একটা দেশ সমস্যায় পড়েছে এবং এ ধরনের ঝামেলা যেন আর না হয় সেজন্য আমাদের একে অপরকে সহায়তা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই জেআরসি শেষ করতে চায় ঢাকা
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) বৈঠক সম্পন্ন করতে প্রস্তুত ঢাকা। কিন্তু নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ঢাকা চাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগেই জেআরসি বৈঠক শেষ হবে।
এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, জেআরসি বৈঠকের জন্য আমরা বারবার উদ্যোগ নিয়েছি। এটা এক হাতে হয় না। তারা (ভারত) আশ্বস্ত করেছে। কিন্তু আমরা এখনও চূড়ান্ত কোনো তারিখ পাইনি। আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে জেআরসি মিটিং করার জন্য। আমরা তাগাদা দেব।
মোমেন বলেন, কয়েকটি নদীর সীমানা চিহ্নিত করা নিয়ে সমস্যার কথা উঠেছে। এবারের বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়েছে যে যৌথভাবে এটি পর্যবেক্ষণ করা হবে। আর আমরা সবগুলো নদীপথ উন্মুক্ত করতে বলেছি।
বন্যা মোকাবিলায় কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত
বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ঢলের পানির সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। বন্যা কখনো বন্ধ করা যাবে না। তবে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি যেন কমানো যায়, সেটার চেষ্টা করতে হবে।
মোমেন বলেন, আমরা ভারতকে বলেছি, আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম, শেয়ারিং ডাটা ও পূর্বাভাসগুলো শেয়ার করতে। তারা রাজি আছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করব।
বাণিজ্য আরো বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের হিসাব অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্য ১৬০০ কোটি ডলার এবং ভারতের হিসাব মতে ১৮০০ কোটি ডলার। এরমধ্যে আমাদের রপ্তানি ২০০ কোটি ডলার। এটি বাড়ানো দরকার। তাদের (ভারত) বলেছি, বাণিজ্য বাড়াতে আমাদের কিছু পণ্যের ওপর থাকা অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত একটা সমস্যার কথা বলেছে। তারা বলছে, তাদের শতশত টাকা আমাদের সীমান্তে এসে পড়ে থাকে। অনেক দিন সময় লাগে। আমাদের সঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের মেম্বার ছিলেন। ওনারা যৌথভাবে দেখবে। কোথায় কোথায় কাজ করলে বিষয়টা যেন সমাধান হয়।
ভারতের ভেতর দিয়ে একটা ট্রানজিট প্রস্তাব আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছি কিনা-জানতে চাইলে মোমেন বলেন, এটাও আলোচনা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু
বাংলাদেশ-ভারতের সপ্তম জেসিসি বৈঠকে ছিল রোহিঙ্গা ইস্যুও। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদের বলেছি, মিয়ানমার আমাদের সঙ্গে আলাপ করেছে। আমরা বলেছি, তোমরা তো তাদের বন্ধু রাষ্ট্র; মিয়ানমারকে বলো এ সমস্যার সমাধান করতে। এদের প্রত্যাবর্তন না হলে সবারই ক্ষতি হবে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে পুরো অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মোমেন বলেন, আমরা বলেছি মিয়ানমারকে চাপ দিতে। তারা (ভারত) বলেছে, চেষ্টা করবে।
দিনবদলবিডি/Rony