ইবাদতে সেলফি প্রবণতা পাপের কারণ

ধর্ম ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:৫২, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ২৮ মাঘ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে হজ করল এবং এ সময় অশ্লীল ও গোনাহের কাজ থেকে বিরত থাকল, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে।

হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। স্বাধীন এবং সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের জন্য জীবনে একবার হজ ফরজ। ইরশাদ হয়েছে, ‘বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি ও সামর্থ্য যে রাখে, সে যেন হজ করে এবং যে এ নির্দেশ অমান্য করবে সে কুফুরির আচরণ করবে, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ব প্রকৃতির ওপর অবস্থানকারীদের মুখাপেক্ষী নন।’ সুরা আলে ইমরান : ৯৭

হজ আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। হাজিরা আল্লাহর মেহমান। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হজ-ওমরাকারীরা আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা যদি তার কাছে প্রার্থনা করে, তিনি তা কবুল করেন। আর যদি তার কাছে ক্ষমা চায়, তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন। সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৮৯২

কবুল হজ মানুষকে নিষ্পাপ করে। এ জন্য হজ হতে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। মানুষকে দেখানোর জন্য নয়। হাজি সাহেব উপাধি পাওয়ার জন্য নয়। নামের আগে হাজি তকমা লাগানোর জন্য নয়। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে হজ করল এবং এ সময় অশ্লীল ও গোনাহের কাজ থেকে বিরত থাকল, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসবে।’ সহিহ বোখারি : ১৫২১

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা হজ-ওমরাহ সঙ্গে সঙ্গে করো। কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গোনাহ এভাবে দূর করে, যেভাবে হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। আর মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত।’ সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৮৮৭

এত এত মর্য়াদা ও ফায়দা রেখেছেন আল্লাহতায়ালা পবিত্র হজে। অথচ হজ করতে গিয়ে আমরা কি করছি। একটু ভেবে দেখার দরকার নয় কি? আল্লাহকে পেতে হলে, তার ক্ষমা পেতে হলে, নিষ্পাপ হতে হলে চাই সবার আগে মনটাকে শতভাগ আল্লাহমুখী করা। মানুষমুখী করা নয়। আর এই আল্লাহমুখীতার জন্য, বিনয়ে, নম্ররভাবে আল্লাহর মুখোমুখি হতে হলে সবার আগে প্রয়োজন দুনিয়ায় দেখানোর মতো যা কিছু। সেখান থেকে নিজে সরিয়ে ফেলা। আমরা কি সেটা পারছি? হজে গিয়ে মিনিটে মিনিটে ছবি তোলা, ফেসবুকিং করা। এর মাধ্যমে কি বুঝাতে চাইছেন? এতে কি কারও উপকার হচ্ছে? যারা দেখছে তাদের কি উপকার? আপনি ছবি তুলে পোস্ট দিতে গিয়ে সময়ের অপচয় করছেন না তো? আপনার উপকারটা কি শুনি? কিন্তু এ কাজে অপকার আছে ভয়ংকরভাবে।

কারণ মনে লোক দেখানো কিছু চলে এলে সব বরবাদ হবে। লোক দেখানো ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাজির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে বেখবর; যারা তা লোক দেখানোর জন্য করে এবং নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র অন্যকে দেয় না।’ সুরা মাউন : ৪-৭

হজ ও ওমরাহ যেহেতু একটি ইবাদত, সেটা ইবাদতের মতোই পালন করা উচিত। হজের সফরে এমন কিছু না করা, যাতে হজের মূল উদ্দেশে ব্যহত হয়। আল্লাহমুখিতা থেকে দূরে সরিয়ে না ফেলে। হজের সফলে দুনিয়াবি কাজ যত বেশি করবেন। ততই মন আল্লাহর ভালোবাসা থেকে দূরে সরে যাবে। সুতরাং ছবিতে মন নয়, মন দিতে হবে ইবাদত-বন্দেগিতে।

সৌদি আরবে অনেক ইসলামি নিদর্শন আছে। হজের সফরে যেয়ে সময় পেলে, সেগুলোতে যাওয়া বারণ নয়। কিন্তু আল্লাহর ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলা মোটেই অর্থবহ কাজ নয়। একজন মুমিন কখনোই অনর্থক কাজে সময় ব্যয় করতে পারে না। সময়ের হিসাব আল্লাহ চাইবেন। সেটা মনে রাখা দরকার।

সুতরাং যেসব কাজ হজের সঙ্গে যায় না। আল্লাহর ক্ষমা পেতে বাধা। আমাদের উচিত সেগুলো পরিহার করা। এই বিষয়ে সচেতনতা কাম্য।

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়