মধুখালীর মন্দিরে আগুন ও 'হত্যাকাণ্ডপূর্ব কাহিনী' ধর্মীয় নয়!

নিউজ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:০২, বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

ডুমাইন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিৎ কুমার সরকারকে চাঁদা না দেয়ায় শ্রমিকদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। চাঁদা না পাওয়ার আক্রোশে অনিচ্ছাকৃত মন্দিরে অগ্নিসংযোগের দায় চেয়ারম্যান-ইউপি সদস্য চাপিয়ে দেয় নির্মাণ শ্রমিদের ওপর। পূর্ব কাহিনীর জেরে  নিরপরাধ দুইজন শ্রমিককে প্রাণ দিতে হলো। এর সাথে ধর্মীয় কোন যোগসাজশ ছিল না।

ফরিদপুরের মধুখালীতে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের জেরে দুই ভাই হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার উপক্রম হয়। যদিও সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ায় বড় সহিংসতা এড়ানো যায়। তবে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহত দুই ভাইয়ের প্রাণহানির ঘটনার সূত্রপাতে কোনো ধর্মীয় কারণ ছিলোনা বলে জানা যায়।নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে এবং মূল কারণ ধামাচাপা দিতেই ধর্মীয় উস্কানি ছড়ানো হয় বলে দাবি স্থানীয় মানুষদের। ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় সামনে আসায় একটু অসাবধানতায় বিক্ষুদ্ধ জনতার হাতে ঝরে যায় দুটি প্রাণ।

স্থানীয়রা জানান, মন্দিরের প্রায়  ২০ গজ দূরে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়। হিন্দু অধ্যুষিত ওই গ্রামের বিদ্যালয়ের সম্প্রসারণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন নিহত ২ শ্রমিক। তাদের কাছে ডুমাইন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য অজিৎ কুমার সরকার চাঁদা দাবি করে নানাভাবে কাজে বাধা সৃষ্টি করে। চাঁদা না পেয়ে  অজিতের লোকজন দু’দফা নির্মাণ কাজের সামগ্রী জোর করে নিয়ে আসতে চায়। এতে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের লোকদের সাথে শ্রমিকদের বাকবিতন্ডা হয়। এই নিয়ে ক্ষুদ্ধ হন তারা।  পূর্ব কাহিনীর আক্রোশকে পুঁজি করে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের দোষ শ্রমিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয় বলেই তাদের দাবী। আর সেই সুযোগে ঘি ঢালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।  শ্রমিকদের গায়ে সাম্প্রদায়িকতার দোষ লেপটে দিয়ে মারধর শুরু করেন চেয়ারম্যান। সাথে ইউপি সদস্য যোগ দিয়ে শ্রমিকদের প্রহার করেন।

এতেই উপস্থিত হাজারো জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠে। বিক্ষুদ্ধ হয়ে তারাও মারধর, ভাংচুর ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে শ্রমিকদের ওপর। অবস্থা বেগতিক হলে  ইট-পাটকেল থেকে বাঁচতে চেয়ারম্যান সরে পড়েন। রড ও ইট দিয়ে আরশাদুল, আশরাফুল ও আনোয়ারের হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। মাথা থেতলে দেয়া হয়। নিহত হয় দুই ভাই আরশাদুল ও আশরাফুল। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউপি চেয়ারম্যান আইনকে নিজের হাতে নিয়ে খেটে খাওয়া দুই দিন মুজুরকে হত্যায় প্ররোচিত করেছেন। শ্রমিকদের সাথে বাকবিতন্ডা ও চাঁদা না পাওয়ার আক্রোশ মেটাতেই মন্দিরের প্রতীমায় অগ্নিসংযোগের দোষ চাপিয়ে দেয়। যার ফলে নিরপরাধ দুইজন শ্রমিককে প্রাণ দিতে হলো। এর সাথে ধর্মীয় কোন যোগসাজশ ছিল না বলেও জানান তারা।

কাজেই এই ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দোষ এড়াবার সুযোগ নেই।বর্তমানে দুজনই পলাতক রয়েছেন।শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ।

দিনবদলবিডি/Nasim

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়