কুড়িগ্রামে চালু হলো এক টাকার রেস্টুরেন্ট

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:১৯, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২ মাঘ ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

কুড়িগ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চালু হলো এক টাকার রেস্টুরেন্ট। সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চরসুভারকুঠি গ্রামে বৃহস্পতিবার বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এ রেস্টুরেন্ট চালু করা হয়।

 

দেশের প্রেক্ষাপটে বাজারে এক টাকা এখন নেহাত মূল্যহীন। প্রায় বিলুপ্তির পথে এক টাকার নোটও। দোকানিরা এর চাহিদা সারেন চকলেট দিয়েই। কিন্তু এক টাকায় রেস্টুরেন্টের খাবার, অবিশ্বাস্য! তবে তা দেখিয়ে দিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সেই রেস্টুরেন্টে এক টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বিরায়ানি, পোলাও, ভাত, মাছ, মাংস, ডিমসহ ১২ পদের খাবার। ক্ষুধার্ত মানুষেরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইচ্ছামতো তাদের পছন্দের খাবার খেতে পারছেন। মনোরম ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে তৃপ্তি সহকারে পছন্দের খাবার খেতে পেরে খুশি সুবিধাভোগীরা।

দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতির বাজারে সমাজে এমন অনেক অসহায়, দরিদ্র এবং গৃহহীন মানুষের তিন বেলা খাওয়া কষ্টকর। সেখানে শহরের রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়! কিন্তু এক টাকার বিনিময়ে পেট পুরে খেতে পেরে খুশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের হতদিরদ্র এসব মানুষ।  

সুবিধাভোগী ছকিনা বেগম বলেন, ‘এক টাকার রেস্টুরেন্টে নাতি-নাতনি, বিয়াইন, বোনসহ আসছি। হামরা গ্রামের মানুষ কোনো দিন চিন্তা করতে পারি নাই যে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খামো। আজকে এক টাকায় পেট ভরে খেতে পেরে সবাই খুশি হয়েছে।’

সুবিধাভোগী সত্তরোর্ধ্ব কাশেম আলী বলেন, ‘বাবা মোর বয়স মেলা হইছে। টাকার অভাবে কোনো দিন বড় বড় হোটেলে খাবার খেতে পারি নাই। চা-বিস্কুট পাঁচ টাকা দিয়ে খাইছি। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় সেটাও হয় না। কিন্তু বউসহ এসে এক টাকায় এমন দামি খাবার পামো, চিন্তাই করি নাই।’

সুবিধাভোগী বুলবুলি আক্তার বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে এসেছি এক টাকার হোটেলে। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, সালাদ, ফল, মিষ্টি খেলাম। কামলা দেওয়া সংসারে শহরের হোটেলে গেলে কম করে হলেও চার থেকে পাঁচ শ টাকা খরচ হতো। কিন্তু এখানে এক টাকায় খেতে পেরে স্বপ্নই মনে হচ্ছে।’

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ মানুষকে এই রেস্টুরেন্ট থেকে সেবা দেওয়া সম্ভব। কুড়িগ্রামে এই রেস্টুরেন্ট একটি মডেল মাত্র। দেশের বিভিন্ন দরিদ্র এলাকায় এ ধরনের কার্যক্রম চালু করা গেলে ক্ষুধায় মানুষের কষ্ট থেকে মুক্তির পাশাপাশি পুষ্টিজনিত অভাবের রোগ থেকে মুক্তি মিলবে এই জনপদের মানুষের।

দিনবদলবিডি/Rabiul

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়