মিনা যাত্রার মাধ্যমে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ রাতেই

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ১১:৩৫, বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২, ২২ আষাঢ় ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

পবিত্র হজের ৫ দিনের মূল আনুষ্ঠানিকতা তথা তারবিয়াত আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরুর হওয়ার কথা। কিন্তু হজযাত্রীদের সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়াল্লেমরা (যারা মিনা-আরাফাতে তাঁবু ও হজযাত্রীদের জেদ্দা থেকে মক্কা এবং মদিনায় যাতায়াতের গাড়ির ব্যবস্থা করে থাকেন) একদিন আগের রাত থেকেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেওয়া শুরু করেন। সে হিসেবে মূলত আজই শুরু হচ্ছে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

হজযাত্রীরা আজ বাদ এশা পবিত্র মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় রওনা হবেন। এসময় গুঞ্জরিত হবে তালবিয়া- ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল-হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল-মুলক, লা শারীকা লাক।

মিনায় পৌঁছে হজযাত্রীরা ফজর থেকে শুরু করে এশা অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন নিজ নিজ তাঁবুতে। তবে খায়েফ ও কুয়েতী মসজিদের কাছাকাছি তাঁবু থাকলে মসজিদে গিয়েও নামাজ আদায় করতে পারেন হজযাত্রীরা। ৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর হজযাত্রীদের আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা থাকলেও আগামীকাল ৮ জিলহজ রাতেই নিয়ে যাবেন মুয়াল্লিমের দায়িত্বশীলরা। সেখানে আগে পৌঁছে গেলে ফজর এবং জোহর-আসর আদায় করবেন আরাফাতের ময়দানে। এখানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুৎবা দিবেন খতীব। তবে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের তাঁবু বেশ খানিকটা দূরে থাকায় তাদের পক্ষে মসজিদে নামিরায় যাওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে নিজ নিজ তাঁবুতেই তারা নামাজ আদায় করে নেন। আর এ দিনটিই হচ্ছে হজ। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল-হাজ্জু আরাফাহ। অর্থাৎ আরাফাতে অবস্থানই হচ্ছে হজ। যে ব্যক্তি আরাফাতের ময়দানের বাইরে অবস্থান করে চলে এল তার হজ হলো না।

এদিন জোহর ও আসর নামাজ শেষ করে হাজিরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতে অবস্থান করে জীবনের সব ছোট-বড়, জানা-অজানা গুনাহ মাফের জন্য কায়মনোবাক্যে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন। চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে তারা বিভিন্ন অপরাধের স্বীকারোক্তি এবং অপরাধ স্মরণ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। তারা নিজের জন্য, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, পরিবার সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন।

সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মাগরিব না আদায় করে হাজি সাহেবদের যাত্রা শুরু হবে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে। সেখানে যাওয়া মাত্র মাগরিব ও এশা এক আজানে, দুই ইকামাতে আদায় করবেন তারা। এরপর মুযদালিফায় খোলা আকাশের নিচে মাথা খোলা অবস্থায় রাত্রীযাপন করতে হবে। ১০ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর আবার মিনায় ফিরে সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পূর্বে বড় জামারাতে ৭টি কঙ্কর নিক্ষেপ, কোরবানি সম্পন্ন করার পর মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম পরিত্যাগ করবেন হাজি সাহেবরা। সুযোগ বুঝে মক্কায় গিয়ে ফরজ তাওয়াফ করতে হবে ৩ দিনের মধ্যে। ১১ ও ১২ যিলহজও হাজী সাহেবদের সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পর ৩টি জামারাতে ৭টি করে মোট ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে হবে। যারা সংক্ষেপ করতে চান ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করবেন। নইলে ১৩ জিলহজ সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পর আবারও ৩টি জামারাতে ৭টি করে ২১টি কঙ্কর মেরে মিনা ত্যাগ করতে হবে।

পরিশেষে মক্কায় ফিরে বিদায়ের দিন বিদায়ী তাওয়াফের পূর্ব পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে প্রতি ওয়াক্তের নামাজ ও যত বেশি সম্ভব তাওয়াফে সময় কাটাবেন হাজি সাহেবরা। আল্লাহ তাআলা সবাইকে সহিহ তরিকায় হজ পালন করে মাসুম বা গুনাহমুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়