যেভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ রাত ১২:০৩, মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৩, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারের হত্যার পর পুরস্কার হিসেবে তৎকালীন জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার “ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ” জারির মাধ্যমে খুনিদের দায়মুক্তি দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে চাকরি দিয়েছিলেন।

১৯৭৬ সালের ৮ জুন বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি শরিফুল হক ডালিমকে প্রথমে বাংলাদেশের বেইজিং দূতাবাসে প্রথম সচিব পদে নিয়োগ  দেয়া হয়। সেখান থেকে তিনি ১৯৮২ সালে হংকংয়ের বাংলাদেশ মিশনে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে নিয়োগ পায়। পরবর্তীতে তিনি পদোন্নতি পেয়ে কেনিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও তানজানিয়ার অনাবাসী দূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি নূর চৌধুরীকে ইরানে দ্বিতীয় সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়য়। এরপর তিনি আলজেরিয়া ও ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪-৯৬ সালে তিনি হংকংয়ে বাংলাদেশ মিশনের কনসাল জেনারেল ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায়। পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় আশ্রয় নেয়।

বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর রাশেদ চৌধুরীকে ১৯৭৬ সালে সৌদি আরবে দ্বিতীয় সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর কেনিয়া, মালয়েশিয়া, জাপান ও ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাসে চাকরি করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে দেশে ফিরতে নির্দেশ দিলেও তিনি তা অমান্য করে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায়।

বঙ্গবন্ধুর অপর খুনি আজিজ পাশাকে আর্জেন্টিনায় প্রথম সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০০১ সালের জুন মাসে তিনি জিম্বাবুয়েতে পলাতক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

এছাড়া মেজর এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদকে আলজেরিয়ায় প্রথম সচিব, মেজর বজলুল হুদাকে পাকিস্তানে দ্বিতীয় সচিব, শরিফুল হোসেনকে কুয়েতে দ্বিতীয় সচিব, ক্যাপ্টেন কিসমত হাশেমকে আবুধাবিতে তৃতীয় সচিব, নাজমুল হোসেন কানাডায় তৃতীয় সচিব, আবদুল মাজেদকে সেনেগালে তৃতীয় সচিব, মেজর শাহরিয়ার রশিদকে ইন্দোনেশিয়ায় দ্বিতীয় সচিব এবং এম খায়রুজ্জামানকে মিশরে তৃতীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বদানকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশীদ দূতাবাসের চাকরিতে যোগ দিতে রাজি হয়নি। তারা দু'জন লিবিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে।

উল্লেখ্য, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ১২ খুনির মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। এই পাঁচজন হলো সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ, এ কে বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দিন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল খুনি এম এ মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অপর পাঁচ আসামির মধ্যে বিদেশে পালিয়ে রয়েছে খন্দকার আবদুর রশিদ, এম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান।

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়