শেখ সাদির ‘বালাগাল উলা বি কামালিহি...’ নিয়ে একটি ঘটনা

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৬:১৩, শনিবার, ২৩ জুলাই, ২০২২, ৮ শ্রাবণ ১৪২৯
বালাগাল উলা বি কামালিহি/কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি/হাসুনাত জামিয়ু খিসালিহি/সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি

বালাগাল উলা বি কামালিহি/কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি/হাসুনাত জামিয়ু খিসালিহি/সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি

মহাকবি শেখ সাদি ছিলেন পারস্য কবি। ছন্দবদ্ধ চার পদের আরবি এই নাতের রচয়িতা…

বালাগাল উলা বি কামালিহি,

কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি,

হাসুনাত জামিয়ু খিসালিহি,

সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি...

অর্থ: `তিনি পৌঁছে গেছেন সর্বোচ্চ মর্যাদায় তাঁর সুমহান চরিত্রের দ্বারা।

বিদুরিত হয়েছে সকল অন্ধকার তাঁর সৌন্দর্যের ছটায়।

সম্মিলন ঘটেছে তাঁর মাঝে সকল উন্নত চরিত্রের।

পেশ করুন তাঁর প্রতি ও তাঁর  সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি দরুদ ও সালাম।'

মহাকবি শেখ সাদি ছিলেন পারস্য কবি। ছন্দবদ্ধ চার পদের আরবি এই নাতের রচয়িতা। হজরত শেখ সাদি ৫৭৫ হিজরিতে পারস্যের সে সময়ের রাজধানী সিরাজনগরে জন্মগ্রহন করেন।

তার পুরো নাম শেখ আবু আব্দুল্লাহ মোশারফ উদ্দিন ইবনে মুসলে সাদি। শেখ সাদি নামে তিনি অধিক পরিচিত। তিনি একজন উঁচু মানের কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন বিশেষ করে ধ্রুপদী সাহিত্যের জন্য। তিনি একজন পরিব্রাজকও, বহু দেশ পরিভ্রমণ করেছেন, ঘুরেছেন নানা প্রান্তে।

তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য বাগদাদ শরীফ গমন করেন। সে সময় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় আল নিজামিয়াতে লেখাপড়া করেন। তিনি গাউসুল আজম বড়পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহির থেকে এলেমি শিক্ষা গ্রহন করেন।

মানবজাতি অভিন্ন মূল হতে উদ্ভূত, এ কথাটি তিনি বারবার তিনি তার লেখায় এনেছেন। শেখ সাদি তার জীবনের প্রথমদিকে লিখতেন কিশোরদের জন্য, যা ছিল উপদেশমূলক গল্প ও কবিতা। ন্যায় অন্যায় সততা অসততার পার্থক্য ও কর্ম ভেদে তার পরিণাম তিনি তুলে ধরেছেন লেখায়। ফার্সি সাহিত্যে অসাধারণ কীর্তি দেখিয়েছেন, তাই কবিকে ফার্সি গদ্যের জনক বলা হয়।

তার লেখা জনপ্রিয় ‘কাশিদা’ নিয়ে (বালাগাল উলা বি কামালিহি/কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি/হাসুনাত জামিয়ু খিসালিহি/সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি) একটি ঘটনা আছে।

মহাকবি সাদি বালাগাল উলা বি কামালিহি কবিতাটি প্রথম তিন লাইন লিখেন আর মিলাতে পারছিলেন না। তিন লাইন লিখে আর শেষের লাইন না লিখে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তখন ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে স্বয়ং বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বিশেষভাবে আসলেন। রাসূলাল্লাহ (সা.) বললেন, হে শেখ সাদী! আপনি এত অস্থির কেন? কি হয়েছে আপনার? হজরত শেখ সাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি সেই লেখা না লিখতে পারার ব্যর্থতা ও অপারগতার বিষয়ে নবীজিকে (সা.) জানান। তখন রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, আপনি চতুর্থ লাইন লিখুন,
‘সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি’ (সুবহানাল্লাহ!)

অর্থাৎ, ‘উনার প্রতি এবং উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি দরুদ পাঠ করো।’

এভাবেই শেষোক্ত লাইন ‘সাল্লু আলায়হে ওয়া আলিহি’ রাসূল (সা.) বিশেষ সাক্ষাতে বলে যান হজরত শেখ সাদি রহমতুল্লাহি আলাইহিকে। এই কাশিদা পরবর্তীতে মহাকবিকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়