বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো দিন ‘৭ নভেম্বর’

এরিক মোরশেদ || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ০৯:৪১, সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২, ২২ কার্তিক ১৪২৯
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

জিয়া শুধু অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করাই নয়, সেই ক্ষমতা নিষ্কণ্টক রাখতে…

বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘৭ নভেম্বর’ একটি কালো দিন এবং সৈনিক ও অফিসার হত্যা দিবস। বিএনপি এদিনকে বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে অথচ প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের এদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল হায়দারসহ বহু সৈনিক ও অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল।

এমনকি যে কর্নেল তাহের বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন, সেই যুদ্ধাহত শারীরিক প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকেও স্বৈরশাসক জিয়া পরবর্তীতে প্রহসনের বিচার নাটকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন।

আসলে হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই বিএনপির অভ্যুদয়, তারা এদিনটি যেভাবে পালন করে তাতে তাই প্রমাণ হয় এবং এদিনই আসলে জিয়াউর রহমান বহু সৈনিক ও অফিসারের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন।

জিয়া প্রথমে তার মনোনীত বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক পদে রাখেন। কিন্তু সায়েমকে শিখণ্ডী বানিয়ে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতা কুক্ষিগত ছিল তার হাতেই।

জিয়া শুধু অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করাই নয়, সেই ক্ষমতা নিষ্কণ্টক রাখতে নির্বিচারে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অফিসার ও সৈনিক হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রেখেছিলেন। বিশেষ করে অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদেরকে বেছে বেছে নির্মম নির্যাতন ও হত্যা করা হয়।

অগণতান্ত্রিকভাবে সেনা ছাউনিতে বিএনপির জন্ম। ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতালোভী হায়েনাদেরকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তারা দল গঠন করেছে। আজ যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচারের নামে বড়বড় কথা বলেন তারা আসলে ২৫ শে মার্চের কালরাত, ১৫ই আগস্টের বর্বরতম পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ, ২১ শে আগস্টের বিভীষিকাময় গ্রেনেড হামলা হত্যাযজ্ঞ, ৩ নভেম্বর নিশংসতম জেল হত্যা, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের নামে দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা অফিসার হত্যাযজ্ঞ সংগঠনকারী রাজনৈতিক পিশাচদের রক্তবীজ ছাড়া আর কিছুই নন। আজ যারা দেশকে উন্নয়নের সোপানে নিয়ে যাওয়া  সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তিহীন সমালোচনা তথা বিষোদগার করেন, মির্জা ফখরুল সাহেবসহ সেই তারা ১৫ আগস্ট ২১শে আগস্ট ৭ নভেম্বরের নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো বারুদের গন্ধকে আতরের খুশবাইয়ের মতো মনে করেন। এইসব দিন তাই তাদের কাছে উৎসবের আবহ নিয়ে আসে- কখনো কখনো সমারোহ করে কেক কাটার উপলক্ষ পেয়ে যান তারা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাজাকারতন্ত্রী সামরিক সরকারের উচ্ছিষ্টে হৃষ্টপুষ্ট হওয়া দানবদের পৃষ্ঠপোষকতা ও আনুকূল্য গ্রহণ করে আগে ও পরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন অনেকেই। এদিকে গত একযুগ ধরে আমরা দেখছি, বিএনপি নির্বাচনকে বর্জন করছে, প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা এমনকি নির্বাচন ঠেকানোর নামে পেট্রোল বোমা মেরে শতশত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে চেয়েছে, কিন্তু জনগণ তা হতে দেয়নি এবং দেবেও না ইনশাআল্লাহ! তাই আসুন, প্রার্থনা করি ৭ নভেম্বরের শহীদ দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকদের আত্মার সর্বোত্তম শান্তি কামনা করি। একইসঙ্গে সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডের এই দিবসে শুভ বুদ্ধির উদয় হোক দেশের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মহলের।

লেখক: সদস্য, অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়