আগামী ২৫ বছরে হারিয়ে যেতে পারে ১০ চাকরি

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৪২, রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৩, ১ শ্রাবণ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

বর্তমানে বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বিগত কয়েক বছরে  বিভিন্ন কাজে এআই ব্যবহারের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। ফ্যাক্টরি কর্মী থেকে সংবাদ উপস্থাপক সব জায়গাতেই এআই-এর দেখা মিলছে। একদিকে এটি যেমন চমকপ্রদ ব্যাপার আরেকদিকে হুমকি স্বরূপ। কারণ এআই-এর ব্যবহার যদি দিন দিন বৃদ্ধি পায় তাহলে অনেক চাকরি আছে যেগুলো হারিয়ে যাবে আর অসংখ্য মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। আগামী ২৫ বছরের মাঝে যে চাকরিগুলো হারিয়ে যেতে পারে।

১.গুদাম কর্মী

এআই-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে যে চাকরিটি সবার আগে হারিয়ে যাবে সেটি হল গুদাম কর্মী। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আমাজনের জেফ বেজোস বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি তার ওয়্যার হাউস বা গুদামগুলোকে পুরোপুরি মেশিন চালিত করতে চান। আমাজন এমন কিছু রোবট তৈরি করছে যেগুলো সপ্তাহে ৭ দিনই ২৪ ঘন্টা করে কাজ করতে পারবে , যা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। এলন মাস্কও এআই ব্যবহারের ব্যাপারে ভীষণ উৎসাহী কিন্তু এলন তার প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি এআই দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে চান না।

২.ট্যাক্সি ও উবার ড্রাইভার

সেদিন বেশি দূরে নয় যখন এআই ব্যবহার করে ড্রাইভার ছাড়া ট্যাক্সি বা উবার চালানো যাবে। সম্প্রতি এমন গাড়ির দেখা মিলেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই গাড়িতে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করে ম্যাপে ঠিকানা নির্দেশ করে দিলে এটি আপনাকে গন্তব্যে নিয়ে যাবে। আর ট্যাক্সি বা উবার যদি এআই – এর মাধ্যামে চালানো হয় তাহলে চাকরি হারাবে গাড়ি চালকেরা।

৩.পে-রোল কর্মী ও মূল্য বিশ্লেষক

বর্তমানে এআই ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্য-বিশ্লেষণের কাজগুলো করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভবিষত্যে পে- রোল ক্লার্ক, পে-রোল ম্যানেজার, পে-রোল স্পেশালিস্ট এই চাকরিগুলো হারিয়ে যাবে। আর এই কাজগুলো নির্ভুলভাবে করারনোর জন্য এআই-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে।

৪.গাড়ি মেকানিক

আমরা দেখতে পাচ্ছি যে টেসলা অটো-মোবাইল জগতে বিপ্লবের ঢেউ নিয়ে এসেছে আর এটা কেবল শুরু। অটো-মোবাইল শিল্পজগত এখন পুরোপুরি বিদ্যুৎ -নির্ভর হওয়ার পাশাপাশি নিজে ড্রাইভ করতে পারবে এমন গাড়ি তৈরির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতের মেশিনগুলো কম্পিউটার সায়েন্টিসদের মতো আচরণ করবে। গাড়িগুলোতে চড়ে মনে হবে গাড়ি নয় কম্পিউটার চালানো হচ্ছে। আর অনেক বিশ্লেষকদের ধারণা ভবিষ্যতে এমন মেশিন তৈরি করা হবে যা মানুষের সাহায্য ছাড়া নিজেই গাড়ির ছোট-বড় সকল সমস্যার সমাধান করতে পারবে, কোনো মানুষ মেকানিকের সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে না। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো গাড়ি মেকানিক চাকরিটি হারিয়ে যাবে।

৫.অ্যাসেম্বলি লাইন কর্মী

এআই বা মেশিনের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি চাকরি হারাবে বিভিন্ন ফ্যাক্টরির অ্যাসেম্বলি লাইন কর্মীরা। গবেষণায় উঠে এসেছে যে শিল্পক্ষেত্রে মেশিনের ব্যবহারের ফলে ১৯৪৭ সাল থেকে প্রায় ৩ মিলিয়ন ম্যানুফ্যাকচারিং চাকরি হারিয়ে গিয়েছে। আর এর ফলে প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন অর্থ কোম্পানিগুলোতে যোগ হয়েছে। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো এখন মানুষ কর্মীর বদলে রোবট দিয়ে কাজ করাতে বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছে।

৬.গভীর সমুদ্রের ডুবুরি

বিগত কয়েক দশক ধরে গভীর সমুদ্রের ডুবুরিরা সমুদ্রের বিভিন্ন স্থান অনুসন্ধান করা সহ গবেষণার কাজও করে আসছে। কিন্তু এই কাজগুলো করতে দক্ষতার প্রয়োজন এবং সেই সাথে এটি ভীষণ বিপদজনক। তাই বর্তমানে এসব কাজে রোবট ও ড্রোন ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক পরীক্ষামূলকভাবে গ্রেট ব্যারিযার রীফে এধরণের পরীক্ষা চালিয়ে সফলতা লাভ করেছে। যার ফলে এখন সমুদ্র অভিযানে রোবটের ব্যবহারের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।

৭. এয়ার-ট্রাফিক কন্ট্রোলার

অটো-মেশিনগুলো ভবিষ্যতের জব র্মাকেটগুলোতে বিশাল জায়গা দখল করতে চলেছে। কিন্তু অনেকে ধারণা করছেন বিশেষ কিছু কাজে এই অটো-মেশিনগুলো ব্যবহার করা হবে যেখানে কোনো মানুষ যদি ভুল করে তার প্রভাব হবে ভয়াবহ। তেমনই একটি কাজ হল এয়ার -ট্রাফিক কন্ট্রোলার। হয়তো ভবিষ্যতে এয়ার-ট্রাফিক কন্ট্রোলারের কাজটি পুরোপুরি এআই দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

৮. ফাস্ট-ফুড রেস্তোরার সার্ভার

জাপানের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাগুলোতে মানুষের পরিবর্তে রোবট ম্যানেজার ও ওয়েটারদের কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। এমন কি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকডোনালসে অর্ডার নেওয়ার জন্য অটোমেটিক সিস্টেম চালু করা হয়েছে। যদিও রান্না করা ও খাবার দেওয়ার জন্য মানুষ কর্মী রয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে হয়তো এই খাবার পরিবেশনের কাজটি পুরোটাই রোবটদের দখলে চলে যাবে।

৯.লাইব্রেরিয়ান

লাইব্রেরিয়ান চাকরিটি যদিও অটো-মোবাইল শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে এটি হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মানুষের জীবন-যাত্রার পরিবর্তন। এখন মানুষ বই পড়ার  জন্য লাইব্রেরি যায় না। সবাই এখন মোবাইলে বই পড়ে বা অডিও বই শুনে থাকে। তাই মানুষের মাঝে বই পড়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। যদিও লাইব্র্রেরি হুট করে হারিয়ে যাবে না কিন্তু ভবিষ্যতে পুরো লাইব্রেরি সিস্টেমটি অনলাইন ভিত্তিক হয়ে উঠবে।

১০.ট্রান্সলেটর বা ইনটারপ্রিটার

বর্তমানে ইনটারপ্রিটার একটি জনপ্রিয় চাকরি কিন্তু ভবিষ্যতে আমাদের মানুষ ইনটারপ্রিটারের প্রয়োজন হবে না। কারণ মেশিনই আমাদের ইনটারপ্রিটার হিসেবে কাজ করবে।ধরা যাক, আপনি এমন একটি দেশে গিয়েছেন যার ভাষা জাননে না , অনলাইন ট্রান্সলেটর সেই দেশের ভাষা শোনা মা্ত্রই তা  আপনার ভাষায় ট্রান্সলেট করে দিবে যার ফলেঐ দেশের  ভাষা না জেনেও সে স্থানের মানুষের সাথে কথা বলতে পারবেন। সূত্র: রিডার ডাইজেস্ট

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়