লিপস্টিকের কোন রং কী বার্তা দেয়

অনলাইন ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৫৪, বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

নারীর সাজসজ্জার অন্যতম অনুষঙ্গ লিপস্টিক; ঠোঁট রাঙাতে যার বিকল্প নেই। শুধু যে সৌন্দর্যের জন্য শত রঙের লিপস্টিক ব্যবহৃত হয়, তা নয়। লিপস্টিক আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এখন প্রশ্ন হলো- কীভাবে এলো লিপস্টিক? কবে থেকে এটি প্রসাধনী হিসেবে ব্যবহার করেন নারীরা?

ঠোঁট রাঙাতে নানা ধরনের প্রসাধনীর ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই লক্ষ্য করা যায়। তখন এর নাম ‘লিপস্টিক’ ছিল না। সে সময় নারী এবং অনেক পুরুষ বিভিন্ন গাছের রং এবং ফলমূলের রং দিয়ে ঠোঁট রাঙাতেন। মিশরীয়, সুমেরীয়, রোমান সভ্যতার সময় নারী পানের পাতা, রত্নচূর্ণ, ব্রোমিন, আয়োডিন, অ্যালজিন, বেরী জাতীয় ফল, মাটি, মেহেদী ইত্যাদি দিয়ে ঠোঁট রাঙাতেন। সে সময় কারমাইন রং ব্যবহার করা হতো যা কোচিনিয়াল নামে এক ধরনের পোকা থেকে পাওয়া যেত। 

এরপরই লিপস্টিক ব্যবহার শুরু করেন সমাজের নির্দিষ্ট এক শ্রেণীর নারীরা। গ্রিসে আইন করা হয়- পতিতারা বাধ্যতামূলক লিপস্টিক ব্যবহার করবেন। সে সময় অনেক যৌনকর্মী এই আইন না-মানায় তাদের আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। এরপর ষোল শতকে আবারও লিপস্টিকের ব্যবহার শুরু হয় রানী এলিজাবেথের মাধ্যমে। রানীর ঠোঁটের উজ্জ্বল রং জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দ্রুত সময়ের মধ্যে। 

লিপস্টিকের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ফ্রান্সের নাম। ১৮৮০ সালে প্যারিসে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে লিপস্টিক উৎপাদন শুরু হয়। প্যারিসের সুগন্ধী শিল্প থেকেই চালু হয় এই প্রসাধনীর। ১৮৯০ সালের দিকে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে থাকে লিপস্টিক। লিপস্টিক সে সময় কাগজের কৌটা এবং টিউবে বিক্রি হতো। মরিস লেডি সর্বপ্রথম ১৯১৫ সালে লিপস্টিকের ধাতব কৌটা তৈরি করেন যা বর্তমান লিপস্টিকের মতো নিচ থেকে ঘুরিয়ে উপরে তোলা যায়। বলাবাহুল্য এই লিপস্টিক দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 

সাধারণত দুই ধরনের লিপস্টিক পাওয়া যায়। গ্লসি এবং ম্যাট। ১৯৩০ সালে ম্যাক্স ফ্যাক্টর সর্বপ্রথম লিপগ্লস লিপস্টিক তৈরি করেন। এটি ব্যবহার করতেন তারকারা। হলিউডের অভিনেত্রীদের মাধ্যমে এই লিপস্টিপ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। 

ম্যাট লিপস্টিক সাধারণ। এটি ঠোঁটে লেগে থাকে কিন্তু চকচকে হয় না। অনেকে মনে করেন, যেসব নারী ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করেন তারা অনেক বেশি আত্মসম্মান সচেতন এবং বাস্তববাদী। 

নারী কেন লিপস্টিক ব্যবহার করেন?

নারী প্রধানত ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে লিপস্টিক ব্যবহার করেন। লিপস্টিকের পাশাপাশি লিপলাইনার এবং লিপগ্লস ব্যবহার করেন অনেকে। আবার অনেকে এটি আত্মবিশ্বাসী হতে ব্যবহার করেন। লিপস্টিক মূলত নারীদের মানসিক শক্তি দেয়। 

বয়স বাড়ার সঙ্গে অনেকের শরীরে ছাপ পড়তে থাকে। ছাপ পড়ে ঠোঁটেও। সেই ছাপ অনেকাংশেই কমিয়ে দেয় লিপস্টিক। ফলে নারীকে অপেক্ষাকৃত কম বয়সের মনে হয়। 

মানুষ সামাজিক বা পারিবারিক যে কোনো অনুষ্ঠানে নিজেকে আকর্ষণীয় হিসেবে দেখতে চান। অনেক নারী আকর্ষণ বাড়াতে লিপস্টিক ব্যবহার করেন। মূলত ব্যক্তিগত পছন্দ থেকেই নারীরা লিপস্টিক ব্যবহার করেন।

কোন রঙের লিপস্টিক কি অর্থ প্রকাশ করে

লাল রং : লাল রঙের লিপস্টিক সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেন নারীরা। সহজেই এটি নজর কাড়ে। লাল রঙের গ্লসি লিপস্টিক ভালোবাসার প্রকাশ ঘটায়। অন্যদিকে ম্যাট রং ফুটিয়ে তোলে আবেদন। 

গোলাপি : গোলাপি ঠোঁটের কদর সর্বত্র। হালকা গোলাপি ঠোঁট ফুটিয়ে তোলে নারীর কোমলতা। কোনো নারীর এই রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করা মানে এই বার্তা দেয় যে সে নমনীয় ও কোমল।

কমলা : কমলা রঙের লিপস্টিক অনেকেই ব্যবহার করেন। এই রং তারুণ্যের বার্তা দেয়। অন্তরের খুশি, উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে এই রঙের লিপস্টিক। নিজেকে প্রাণবন্ত ও তরুণ দেখাতে এই রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করেন অনেকে।

পার্পেল : পার্পেল রঙের লিপস্টিক হাজারো মানুষের মাঝে আপনাকে আলাদা করতে পারে। এই রঙের লিপস্টিক মর্যাদা, অভিজাত্য এবং ক্ষমতার জানান দেয়। তাই জমকালো সাজের সাথে ব্যবহার করতে পারেন পার্পেল কালার লিপস্টিক।

ব্রাউন : বর্তমানে এই রঙের লিপস্টিকের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই রং জানান দেয় নিরপেক্ষতা। 

নীল বা বেগুনি : সাধারণত এই রঙের লিপস্টিক বেশি ব্যবহার হয় না। তবে যারা এ ধরনের গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করেন তারা অত্যন্ত সাহসী হন বলে ধরে নেয়া হয়।

দিনবদলবিডি/Jannat

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়