বাদীকে বিয়ে করায় ধর্ষণ মামলায় সাবেক এমপিকে অব্যাহতি

আদালতে সাবেক এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজু -ছবি: সংগৃহীত || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৩৬, বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩, ১৫ চৈত্র ১৪২৯
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে ১৩ মার্চ আদালত জামিন দেয়। শর্ত ছিল তার বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করতে হবে। জামিনের সেই শর্ত মানার পর বুধবার তাকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

ধর্ষণ মামলার বাদীকে ৫০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করে সংসার শুরু করায় পাবনা-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজুকে ধর্ষণের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক বেগম সামছুন্নাহার বুধবার এই অব্যাহতির আদেশ দেন।

এর আগে ১৩ মার্চ একই আদালত বাদীকে বিয়ের শর্তে আরজুকে জামিন দিয়েছিল। সে অনুযায়ী বাদীকে বিয়ে করেন আসামি।

গত বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষানবিশ এক আইনজীবী আদালতে মামলাটি করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বাদীর সঙ্গে প্রথম স্বামীর বিয়েবিচ্ছেদ হয়। সে সময় ওই নারী একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করা অবস্থায় অনেকটা নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। স্বজনরা তাকে ফের বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন।

একপর্যায়ে ২০০১ সালের শেষের দিকে চাচার মাধ্যমে আসামি আরজুর সঙ্গে পরিচয় হয় বাদীর। আরজু নিয়মিত ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে একপর্যায়ে সফল হন। আরজু তাকে জানান, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা গেছেন। একাকীত্বের অবসান ঘটাতে নতুন সংসার শুরু করতে চান তিনি। ওই নারী আরজুর প্রেমে পড়ে তার বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া দেন। ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ওই দম্পতির একটি মেয়ে সন্তান হয়। এ সন্তান গর্ভে আসার সময় থেকে আরজু বিভিন্ন ছলচাতুরির মাধ্যমে ভ্রূণ নষ্ট করার চেষ্টা করেন। ওই নারীর দৃঢ়তায় তার সে চেষ্টা সফল হয়নি।

মামলার বিবরণে আরও বলা হয়, সন্তান হওয়ার পর আরজুর আচার-আচরণে পরিবর্তন লক্ষ‍্য করা যায়। তিনি ওই নারীর বাসায় আসা কমিয়ে দেন। এ ছাড়া ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার কথা বলে ওই নারীর বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং নারীর জমানো ৮ লাখ টাকা নিলেও ফ্ল্যাট কিনে দেননি আরজু। তিনি টাকাও ফেরত দেননি। পরে খোঁজ নিয়ে ওই নারী জানতে পারেন, আরজুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী জীবিত। তার ঘরে মেয়েসন্তান আছে এবং স্ত্রীর সঙ্গেই থাকেন তিনি।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আসামি বাদীর কাছে ফারুক হোসেন নামে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম খন্দকার আজিজুল হক আরজু। শারীরিক সম্পর্ক করার জন্যই বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন তিনি। আরজু কয়েকবার নিজে এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালান। একপর্যায়ে বাদীর সঙ্গে বিয়ে এবং তার ঔরসের সন্তানকে সরাসরি অস্বীকার করেন তিনি।

মামলার তদন্তে বাদীর মেয়ে সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এতে ওই সন্তান বাদীর গর্ভজাত এবং আরজু তার জন্মদাতা বলে তথ্য-প্রমাণ উঠে আসে।

দিনবদলবিডি/Rony

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়