আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

অনন্য, অসাধারণ শেখ হাসিনা

নিউজ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:২২, শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪, ২৩ ফাল্গুন ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ২০ বছর ধরে নারীর ক্ষমতায়নের নীরব বিপ্লব চলছে। এই বিপ্লবের একটি অর্জন এবার মন্ত্রিসভায় রেকর্ডসংখ্যক নারী মন্ত্রীর অন্তর্ভুক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন তখনো তিনি হাইকোর্টে প্রথম নারী বিচারপতি নিয়োগ করেন। তার আগে কেউ জেলা প্রশাসক পদেও নারীদের নিয়োগ দেননি। শেখ হাসিনাই প্রথম যিনি সচিব পদে নারীদের নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন। 

বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও ক্ষমতায়নের অগ্রদূত শেখ হাসিনা। জাতির পিতা সংবিধানে নারীর অধিকার ও সমতা নিশ্চিত করেছেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনি নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকল্প, কর্মপরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন। ফলে জেন্ডার সমতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারের নারীবান্ধব উন্নয়ন ও নীতি কৌশল বাস্তবায়নের ফলে গত এক যুগে সরকারি, বেসরকারি, আত্মকর্মসংস্থানসহ সব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, উন্নয়ন-অগ্রগতি এবং বিশ্ব প্রেক্ষাপটে নারী জাগরণ, নারী অগ্রগতির প্রতীক। দেশের সব ক্ষেত্রেই যে উন্নয়ন-অগ্রগতি সেটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণে।

বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ২০ বছর ধরে নারীর ক্ষমতায়নের নীরব বিপ্লব চলছে। এই বিপ্লবের একটি অর্জন এবার মন্ত্রিসভায় রেকর্ডসংখ্যক নারী মন্ত্রীর অন্তর্ভুক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসেন তখনো তিনি হাইকোর্টে প্রথম নারী বিচারপতি নিয়োগ করেন। তার আগে কেউ জেলা প্রশাসক পদেও নারীদের নিয়োগ দেননি। শেখ হাসিনাই প্রথম যিনি সচিব পদে নারীদের নিয়োগ দেওয়া শুরু করেন। এখন বেশ কয়েকজন সচিব নারী। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সেনাবাহিনীতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করেন। তিনি মাঠ পুলিশে নারীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। কর্মক্ষেত্রের সব শাখায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং নারীদের ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। জাতীয় সংসদের স্পিকারও নারী। এই হিসেবে বাংলাদেশের ক্ষমতার কেন্দ্রে নারীদের প্রভাব এবং অংশগ্রহণ দুটিই বেড়েছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যার মানবিক নেতৃত্বে, বাংলার দুঃখী মানুষের জীবনমান আমূল বদলে গেছে। অভাব, মঙ্গা ও দরিদ্রের কড়াল গ্রাস থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। এক দশকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১০ লক্ষাধিক উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। নতুন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে প্রায় এক কোটি মানুষের। নামমাত্র মূল্যে সার ও বীজ পাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যেমন এক কোটি শরণার্থীসহ প্রায় দুই লাখ স্থানচ্যুত মানুষকে পুনর্বাসন করেন, বাস্তুহীনদের জন্য নির্মাণ করেন বাসগৃহ।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শেখ হাসিনাকে ‘বিস্ময়কর’ নেতা বলে অভিহিত করা হয়। কখনোই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো থেকে পিছপা হননি বঙ্গবন্ধুকন্যা। এই মানবিক নেত্রীর নির্দেশে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষদের মাথাগোঁজার ঠাই করে দিতে প্রায় ঘর তৈরির কাজ অব্যাহত রেখেছে সরকার।

নারীদের মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য দেওয়া হচ্ছে শিক্ষাবৃত্তি। প্রথম শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে আনা হয়েছে নিয়মিত বৃত্তির আওতায়। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে সব শ্রেণির সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের। বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীসহ ৯১ লাখ মানুষকে দেওয়া হচ্ছে সুরক্ষা ভাতা। নারীদের জন্য গর্ভকালীন ছুটি চার মাস থেকে বৃদ্ধি করে ছয় মাস করা হয়েছে, চালু হয়েছে পিতৃকালীন ছুটিও। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য সম্মানী কয়েক ধাপে বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকা উত্তীর্ণ করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

জঙ্গিবাদণ্ডউগ্রবাদ ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এজন্য বিশ্ব নেতারা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার।

শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে সারা দেশ। পাহাড় কিংবা দুর্গম চরেও পৌঁছে যাচ্ছে বিদ্যুতের সুবিধা। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে চারগুণ। স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের ফলে বেড়েছে গড় আয়ু। ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে সহজ হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা। চার লেনের সড়কব্যবস্থা বাস্তবায়িত হচ্ছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। নিজস্ব অর্থায়নে দ্বিতল বিশিষ্ট পদ্মাসেতুর কাজ সম্পন্ন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। গত ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মার দুই পাড়ের মানুষের জীবন আজ গতিময়। দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। এতোদিন টেলিভিশনের পর্দায় বিদেশের যেসব মেগা প্রকল্পের চোখ ধাঁধানো দৃশ্য আমরা দেখতাম, ঠিক সেসব অবকাঠামোই দেশের মাটিতে বাস্তবায়ন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী এসব উদ্যোগের কারণেই একসময়ে তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশকে বিশ্ব আজ সমীহ করছে। গত এক যুগে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানের যে উন্নয়ন, তা আজ বিশ্ব নেতাদের কাছে এক বিস্ময়। এ কারণে ২০১৯ সালে জাতিসংঘের অধিবেশনে তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নের মডেল’ হিসেবে অভিহিত করেন। ২০২১ সালে, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী পালনকালে এই নতুন বাংলাদেশের পেছনে শেখ হাসিনার কৃতিত্বের কথা উল্লেখ করেছেন বিশ্ব নেতারা।

একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এখন সম্মানিত করা হচ্ছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। দেশের সামাজিক পরিস্থিতি উন্নয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখায় বিশ্বের শীর্ষ দশ মহান নেতার একজন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।

তার নান্দনিক নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ইমেজ গড়ে ওঠার স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এ কারণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছে বাংলাদেশ।

১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে যেভাবে বাংলা ও বাঙালির স্বকীয়তার জানান দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, তেমনি শেখ হাসিনাও বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছেন বাংলাকে। তার অদম্য নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ধরিত্রী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা ও দর্শনের কারণে বিশ্ব নেতারাও আজ সমীহের দৃষ্টিতে দেখে বাংলাদেশকে। বঙ্গবন্ধু কন্যার মানবিক ও সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে যেভাবে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ, তাতে উন্নত বিশ্বের কাতারে নাম লেখানোটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এবারের মন্ত্রিসভায়ও রেকর্ডসংখ্যক আটজন নারী মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় চারজন এবং আগের মন্ত্রিসভায় চারজনসহ আটজন নারী এবার সরকারের মন্ত্রিসভায়। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অনন্য রেকর্ড। এর আগে বাংলাদেশে কোনো মন্ত্রিসভায় এত জন নারী সদস্য থাকেননি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী। মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও নারী মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ডা. দীপু মনি। গত ১১ জানুয়ারি যে ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল তাতে চারজন নারী সংসদকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে এই দুজন ছাড়াও ছিলেন রুমানা আলী এবং সিমিন হোসেন রিমি। এবার মন্ত্রিসভায় যে নতুন সাতজনকে সম্প্রসারণ করা হলো তার মধ্যে চারজনই নারী। আর এর মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভায় আটজন নারী অন্তর্ভুক্ত হলেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে একে একে ১৯ বার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে কিন্তু বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি বিচলিত হননি, দ্বিধান্বিত হননি, থমকে দাঁড়াননি বরং আরো দীপ্তপদভারে, আরো প্রত্যয় নিয়ে তিনি এদেশের মানুষের সংগ্রামের কাফেলাকে নিয়ে এগিয়েছেন।

বাংলাদেশে নারী জাগরণ ঘটে গেছে উল্লেখ করে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মেয়েদের যেখানে দিই, সেখানেই তারা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে। নারী ভোটারদের দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টে গেছে। আওয়ামী লীগ কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় করেছে।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের প্রাইমারিতে ৯৮ ভাগ শিক্ষার্থী মেয়ে।

দিনবদলবিডি/Nasim

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়