আলুর গুদাম পুড়লেই লবণের খোঁজে ছুটবেন না, প্লিজ...

এরিক মোরশেদ || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:৪৪, রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২২, ৭ কার্তিক ১৪২৯
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সরকার এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী পক্ষ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই রাজনীতির শতরঞ্জ বিছিয়ে বসেছে। উভয় পক্ষের নেতাদের কথাতেই ফুটে উঠছে নির্বাচনী আবেশ আর উত্তাপ। নিজের পক্ষে…

জাপানের বিখ্যাত দুই সুমো কুস্তিগীর চূড়ান্ত লড়াইয়ে মুখোমুখি। কেউ-ই হার মানছেন না। পুরো দেশের চোখ আটকে আছে কুস্তি স্টেডিয়ামে। সবশেষ কঠিন প্যাঁচে জড়িয়ে ধরে দুই কুস্তিগীর একটা ফুটবলের মতো রূপ নিলেন। ‘ফুটবল’ এদিক ওদিক গড়াগড়ি খায় শুধু। চরম সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন রেফারি। ধৈর্য-সহ্যের চূড়ান্ত সীমা পেড়িয়ে গেছে। যেকোনো একজনকে ঢিল দিতে দেখলেই তিনি অপরপক্ষকে বিজয়ী ঘোষণা করবেন- অবস্থা এমন পর্যায়ে তখন।

প্যাঁচ মারায় ওস্তাদ দুই কুস্তিগীই সুযোগ খুঁজছেন কিভাবে অন্যকে কুপোকাত করা যায়। ‘ফুটবল’ দেখে বোঝা যাচ্ছে না কোনটা কার শরীর, কোনটা কার মাথা। এমন সময় একজনের চোখে ধরা দিল সুবর্ণ সুযোগ। তিনি দেখলেন চোখের সামনেই ঝুলছে প্রতিপক্ষের দুর্বলতম অঙ্গ! ক্ষণমাত্র দেরি না করে দুইহাতে প্রাণপণে চেপে ধরলেন তা।

‘অপকৌশল’ হলেও এর প্রয়োগ ঘটিয়েই এর আগেও তিনি কয়েকটি বড় লড়াই জিতেছেন। টেরটিও পায়নি কেউ। সুতরাং এবারও এসেছে তেমন আরেকটি সুযোগ। কুস্তিগীর বজ্রমুঠিতে চাপ বাড়িয়ে চললেন প্রতিপক্ষের ওপর। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেখা গেল হঠাৎ করেই শরীর ঢিল দিয়ে প্যাঁচমুক্ত হয়ে গেলেন একজন। প্যাঁচমুক্ত হলেন অপরজনও। রেফারি কাছে এসে দেখলেন, তাদের একজন মারা গেছেন। তবে যিনি মারা গেছেন তার দুইহাতে শক্ত করে ধরা আছে নিজের-ই দুর্বলতম অঙ্গ...

অর্থাৎ, এবার সেমসাইড হয়ে গেছে। নিজের প্যাঁচে নিজেই মারা পড়েছেন তিনি! অর্থহীন গল্প আর কি। যাক, এসব বাদ দিয়ে আসুন সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নজর নেই।

‘ঝোপ বুঝে কোপ মারা’র সুযোগ এখন সরকার বিরোধীদের সামনে। আগামী বছরের মধ্যে দেশে ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটের আশংকা করছে সিপিডি (সেন্টোর ফর পলিসি ডায়লগ) সহ অন্যান্য নামিদামি প্রতিষ্ঠান। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হালনাগাদ প্রতিবেদনে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হুমকিতে থাকা বিশ্বের ৪৫টি দেশের তালিকায় নাম রয়েছে বাংলাদেশেরও।

দুনিয়াজুড়ে অর্থনীতির ভবিষ্যত অমানিশাকাল নিয়ে শংকিত সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) এক জরিপেও বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ব পরিস্থিতির আগাম বিশ্লেষণ করে আসন্ন সংকটের অশনি সংকেত দিয়েছেন।

বিরাজমান সব ধরনের লক্ষণ ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামী বছরটি জুড়ে অর্থনৈতিক সংকোচন চরম আকার ধারণ করবে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকাজুড়ে আর এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মূল্যস্ফীতি পৌঁছাতে পারে চরম মাত্রায়। সংকটের ধাক্কায় ইতোমধ্যেই বেসামাল হয়ে উঠছে উন্নত ও ধনী দেশগুলোর তালিকায় ওপরে থাকা ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি। যুক্তরাজ্যের মতো দেশ তার ৭০% থেকে ৮০% জনগণের খাদ্যসংকটের আশংকা করছে।

ক্রমশ ধেয়ে আসা এই সংকট উত্তরণে আপাতত স্বস্তির কোনো খবর দিতে পারছেন না কেউ। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশবাসীকে সংকট মোকাবেলায় প্রস্ততি নিতে। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে জনগণকে আহ্বান জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সরকার যন্ত্রকে তৎপর হতে বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান দেশবাসী হিসেবে বিরোধীপক্ষও সিরিয়াসলি নিয়েছে। তবে তারা খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে বা ব্যয় সাশ্রয়ী হয়ে সঞ্চয় বাড়ানোটাকে সিরিয়াসলি নেয়নি সম্ভবত। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আর আছে এক বছর প্রায়। তাই দেশ এবং সরকারের সম্ভাব্য সঙ্কটকালে সরকার হটানো নয়তো অন্ততপক্ষে আগামী নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান মজুবত করার জন্য কোমড় বেঁধে নেমেছে তারা। এর সর্বশেষ রূপ হচ্ছে বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশ। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের পর তাদের পরবর্তী সমাবেশ হয়েছে খুলনায়।

একদিকে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি অন্যদিকে পরিবহন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বাধা-বিঘ্ন বিশ্বের তাবৎ পরিস্থিতিকে টালমালটাল করে দিচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে দেশগুলোর ক্ষমতার রাজনীতিতেও। এর সর্বশেষ নজির দেখা গেল যুক্তরাজ্যে। মাত্র দেড়মাসের (৬ সপ্তাহ) মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস যার মূলে রয়েছে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট। এত অল্পসময়ে সরকার পতন যুক্তরাজ্যবাসীর জন্য অস্বস্তিকর হলেও প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের প্রতিপক্ষের জন্য তা আশাব্যঞ্জক। এই আশাবাদীদের মধ্যে তার নিজ দলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ছাড়াও আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক।

তাই আমাদের এখানে বিএনপিকে দোষ দেয়া যায় না। ক্ষমতার রাজনীতিতে দলগুলো ক্ষমতায় যাওয়ার সবগুলো সুযোগ আর কৌশলকে কাজে লাগাবে- এটি বেআইনি বা অসাংবিধানিক নয়, এমনকি অনৈতিকও নয়। আর পরিস্থিতি যখন খাদ্য সঙ্কট আর মূল্যস্ফীতির মতো টসটসে পাকা ফলের মতো ঝুলছে চোখের সামনে তখন তো কথাই নেই। এমন পরিস্থিতিতে দুনিয়ায় ছড়ি ঘোড়ানো দেশ যুক্তরাজ্যেই দেড় মাসও টিকছে না সরকার।

বিগত শতাব্দীর সত্তরের দশকে বিশ্বমন্দার জের ধরে যুদ্ধবিধ্বস্ত সম্পদহীন সদ্য স্বাধীন দেশ বাংলাদেশে ১৯৭৪ সালে ঘটানো দুর্ভিক্ষের অমানবিক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা থেকে বঙ্গবন্ধু সরকারকে হটাতে তৎপর হয়ে উঠেছিল একচোখা অভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো। মধ্যপ্রাচ্যে মুখ ঘুরিয়ে বসা বিত্তবান মুসলিম ভ্রাতাকূলসহ আমাদের এখনকার উন্নয়ন অংশীদার পূর্ব-পশ্চিমের মিত্রদের অনেকেরই শত্রুবৎ আচরণ, নিজ দেশে বিশাল জনগোষ্ঠীর বিপরীতে অপ্রতুল সম্পদ ও সামর্থ, সীমিত কৃষি উৎপাদন, পাকিস্তানপন্থি রাজাকার মানসিকতার আমলা ও রাজনীতিকদের বিভীষণবৎ মীরজাফরি বঙ্গবন্ধু সরকারকে চরম কঠিন সময়ের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। এই ‘লোহা গরম’ পরিস্থিতিকে শিখণ্ডি বানিয়ে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট নিজেদের নিষ্ঠুর হীন উদ্দেশ্য হাসিল করে ফেলে ষড়যন্ত্রকারীরা যার রেফারেন্স এখনো তাদের মন্ত্রদীক্ষিত অনুসারীরা হরহামেশাই টেনে থাকেন শেখ হাসিনাকে ভয় দেখাতে।

আমাদের দেশে কথা আছে- কারো আলুর গুদাম পোড়ে আর কেউ লবণের খোঁজে ছুট লাগায়। অর্থাৎ গুদাম পুড়লে আলুর মালিক ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়ে কপাল চাপড়াতে থাকে। এসময় বেশিরভাগ লোক আগুনে পানি ঢালতে ব্যস্ত থাকলেও কেউ কেউ সুযোগে থাকে আয়েশ করে নুন দিয়ে পোড়া আলু খাওয়ার সুখভোগ করতে। অনেকটা এরকমই পরিবেশ যেন বিরাজ করছে এখন। এখানে বিশ্বমন্দার জেরে আলুর গুদামটা ক্ষমতাসীনদের পুড়ছে না, পুড়তে পাচ্ছে সমগ্র দেশবাসীর। এই অবস্থায় তার থেকে পরিত্রাণে, জনগণকে রক্ষা করতে দলমত নির্বিশেষে সবারই উচিৎ আগুন নেভাতে তৎপর হওয়া আগে- লবণের খোঁজে ব্যতিব্যস্ত হওয়া নয়।

হালের রাজনৈতিক আবহে দেখা যাচ্ছে বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে ক্ষমতাসীনরা। ধরপাকড়, বিরোধীদের দমিয়ে রাখতে প্রশাসনের বিশেষ করে পুলিশি তৎপরতাও লক্ষণীয় মাত্রায় কমে এসেছে। এটা আমাদের রাজনীতির জন্য শুভ লক্ষণ। আমরা আশা করছি এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং সরকার সামনের দিনগুলোতে আরো সহনশীল আচরণ করে আসন্ন নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ করতে শেষপর্যন্ত সচেষ্ট থাকবে। এর আভাসও পাওয়া যাচ্ছে।

দিনবদলবিডি প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, শনিবার (২২ অক্টোবর) বিএনপির খুলনার সমাবেশকে কেন্দ্র করে কাউকে গ্রেপ্তার না করার কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে সমাবেশে আসা যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে কিংবা নাশকতা করতে পারেন বলে সন্দেহ হচ্ছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। শনিবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আয়োজিত বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক-এর চতুর্থ বার্ষিক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অর্থাৎ বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে কিছু কৌশল নিজেদের হাতে রেখেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানাচ্ছেন যে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে ধরপাকড় হবে না। টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা সরকারের পক্ষে এই মনোভাব অবশ্যই ইতিবাচক এবং অনেক শঙ্কা আর সন্দেহ-অবিশ্বাসের মধ্যেও সবাই সন্তর্পণে এই আশাই করছেন যে এমন রাজনৈতিক সদিচ্ছা সামনে আরো বিকশিত হবে এবং ক্ষতাসীন ও বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক সদাচরণের সুবাতাস নিয়ে আসবে যেই বাতাবরণ। এমন হলে তা ২১ আগস্টের মতো গ্রেনেড হামলার অপসংস্কৃতি আর বিভীষিকা কিছুটা বিস্তৃত হওয়ার অবকাশও তৈরি করবে আমাদের রাজনীতির অঙ্গনে।

এই দেশের জনগণ আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমার সেই আতঙ্কপ্রহর আর চায় না। তবে সংশ্লিষ্টদের এটা মনে রাখা দরকার যে আন্দোলনে যোগ দেওয়া বিরোধী নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে পতাকাশোভিত রড-লাঠি সেই আতঙ্ক ফের জাগ্রত করে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতি উসকে দিতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে। বিএনপির গতকালের সমাবেশেও এই লাঠি-রড দেখা গেছে।  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমাবেশস্থলে প্রবেশের আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের হাত থেকে সেগুলো জব্দ করতে দেখা গেলেও শেষপর্যন্ত সমাবেশে অংশ নেওয়া অনেকের হাতেই দেখা গেছে লাঠি ও রড।

পূর্বের অভিজ্ঞতায় আমরা বলতে চাই- এই বিষয়টিতে সংযত ও আরো সাবধান হওয়া দরকার বিরোধী পক্ষের। কারণ, এ ধরনের বড় আন্দোলন-সমাবেশে একটি ঢিল বা একটি অপরিণামদর্শী চিৎকারও ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা-দুর্যোগ ডেকে আনতে পারে। এতে হয়তো আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যও হারাতে পারে গতিপথ। এর জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে- আন্দোলনের নামে পেট্রোলবোমার সেই ভয়াবহ  আতঙ্ক প্রহর। কিন্তু পেট্রোলবোমার সেই বিভৎস কৌশল আসলে কিছুই দিতে পারেনি এর প্রযোজকদের। যা কিছু হয়েছে তা হচ্ছে অনেক নিরপরাধ নির্বিরোধী সাধারণ মানুষের নির্মম ভয়াবহ কষ্টকর মৃত্যু, অনেককেই বরণ করতে হয়েছে পঙ্গুত্বের অভিশাপ।

আগুয়ান সংকটের আবর্তে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় অভ্যন্তরীণ নানা বাস্তবতায় খাদ্যসংকট আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলেও অর্থনীতিবিদ ও খাদ্য বিশেষজ্ঞরা এ-ও বলছেন, যথাযথ প্রস্তুতি নিলে বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রভাব তুলনামূলক কম পড়বে বাংলাদেশের ওপর। কিন্তু এই সংকটকেই আরো বাড়িয়ে দিতে পারে অশান্তি আর সংঘাতপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি। ক্রমশ ইতিবাচক হয়ে ওঠার বদলে অতীতের মতো আবারো জ্বালাও-পোড়াও-পিটাও, গুলি-বোমা, হত্যা-গ্রেপ্তারের মতো পরিবেশ আমাদের কারো জন্যই নিরাপদ হবে বলে মনে করার কারণ নেই।

সরকার এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী পক্ষ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই রাজনীতির শতরঞ্জ বিছিয়ে বসেছে। উভয় পক্ষের নেতাদের কথাতেই ফুটে উঠছে নির্বাচনী আবেশ আর উত্তাপ। নিজের পক্ষে ঝোল টানার এই রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় সব পক্ষই যার যার সেরা কৌশলে চাল দেবে- সন্দেহ নেই। তবে একদিকে আন্দোলন আর অন্যদিকে তার প্রতিরোধে মগ্ন সবগুলো পক্ষকেই আমাদের অনুরোধ, আপনাদের কোনো কৌশল, কোনো পদক্ষেপই যেন জনবিরোধী না হয়। মুজিব হত্যা, জিয়া হত্যা, জাতীয় চার নেতা তথা জেল হত্যা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা- এ ধরনের কোনো অপকর্মই শেষতক এইদেশ ও তার জনগণকে সুখকর কিছু দিতে পারেনি। এসবের থেকে ফায়দা যা লোটার তা লুটেছে বাইরের অপশক্তি আর দেশীয় কিছু কুলাঙ্গার।

দুর্বৃত্ত মানসিকতার নেতা ও ষড়যন্ত্রীরা একই অপকর্মে এক বা একাধিকবার সাফল্য পাওয়ার পর বারবার সেই কৌশল খাটাতে থাকে। কিন্তু তারা বোঝে না দশদিন চোরের হলেও একদিন অন্তত গৃহস্থেরও থাকে। একটা সময়ে প্রকৃতিও রুষে দাঁড়াও। ঘটে যায় সুমো কুস্তিগীরের মতো মারাত্মক অঘটন। দেশ ও জনবিরোধী সেই অপকৌশলে শেষতক সেমসাইড হয়ে ধূর্ত সেই জাপানি কুস্তিগীরের মতো নিজেরই না সর্বনাশ করে বসেন- এই বিষয়টিও মাথায় রাখার বিনীত অনুরোধ রইলো সকল পক্ষের প্রতি।

দিনবদলবিডি/আরএজে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়