দ্বিতীয় স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে যুবকের আত্মহত্যা

গাজীপুরের শ্রীপুরে দ্বিতীয় স্ত্রীর মর্জিনার হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে তার চোখের সামনেই হৃদয় (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের ভাড়া বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

নিহত হৃদয় মাগুরার মোহাম্মদপুর থানার পারিঘাটা গ্রামের পিঞ্জর মিয়া শাহিনের ছেলে। প্রায় দুই যুগ ধরে হৃদয়ের বাবা তার শ্বশুড়বাড়ি শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের নুরুল চেয়ারম্যানের বাড়ির এলাকায় বসবাস করছিলেন। তার কাপড়ের ব্যবসা ছিল। 

এসআই বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

জানা গেছে, তিন-চার মাস আগে আর্জিনার সঙ্গে হৃদয়ের বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের বিষয়টি গোপন ছিল। বিয়ের পর হৃদয় শ্রীপুর পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের বহুতল ভবনের নিচ তলায় একটি ফ্ল্যাটে কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখান থেকে আর্জিনা তার বাবার বাড়ি যাওয়া-আসা করেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আর্জিনা ওই ভাড়া বাড়িতে আসেন খবর পেয়ে হৃদয়ও যান তার সঙ্গে দেখা করতে। কিছু সময় পর হৃদয় আবার দোকানে চলে যান। আধঘণ্টা পর ফিরে এসে হৃদয় প্রথমে আর্জিনার বাম হাত, পরে ডান হাত খাটের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। দুই পা বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে দেন। এরপর হৃদয় ফ্যানের হুকে ওড়না বাঁধতে থাকেন। এসময় আর্জিনা চিৎকার শুরু করলে তার মুখের ভেতর থাকা কাপড় বের হয়ে যায়। এ সময় হৃদয় আবারও আর্জিনার মুখে গেঞ্জি গুঁজে দেন। এরপরই হৃদয় আর্জিনার সামনেই গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। কিছু সময় পর স্থানীয়রা ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ এবং আর্জিনাকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে।

মারা যাওয়া হৃদয়ের নানা এমরান হোসেন বলেন, হৃদয়ের আগে আরেকটি স্ত্রী আছে। তার নাম মোহনা। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। কেন, কী কারণে হৃদয় আত্মহত্যা করেছে তা আমি জানতে পারিনি।

দ্বিতীয় স্ত্রী আর্জিনা বলেন, আমি জানতাম হৃদয়ের আগে একটা স্ত্রী আছে। সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তা মেনে নিয়ে বিয়ে করি। হৃদয় কী কারণে আত্মহত্যা করলো সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।