ড. ইউনূস ছাড়াও বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন যেসব নোবেলজয়ী

দিন বদল বাংলাদেশ ডেস্ক || দিন বদল বাংলাদেশ

প্রকাশিতঃ সকাল ১১:৫৪, সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪, ১১ চৈত্র ১৪৩০
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

  • ভারতের অভিজিৎ ব্যানার্জি ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পান
  • ইরানের নার্গিস মোহাম্মদি ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পান
  • জার্মানির ভন ওজিয়েতস্কি ১৯৩৫ সালে শান্তিতে নোবেল পান
  • মিয়ানমারের অং সান সু চি ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পান
  • চীনের লিও শাওবো ২০১০ সালে নোবেল পান
  • বেলারুশের আলেস বেইলিয়াৎস্কি ২০২২ সালে শান্তিতে নোবেল পান 
  • তারা সবাই আদালতের রায়ে দণ্ডিত

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূসকে গত ১ জানুয়ারি ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত, যদিও তিনি এখন জামিনে মুক্ত আছেন। তবে ড. ইউনূস ছাড়াও একাধিক নোবেলজয়ী কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করেছেন।

এই তালিকায় আছেন ভারতের অভিজিৎ ব্যানার্জি, ইরানের নার্গিস মোহাম্মদি, জার্মানির কার্ল ভন ওজিয়েতস্কি, মিয়ানমারের অং সান সু চি, চীনের লিও শাওবো ও বেলারুশের আলেস বেইলিয়াৎস্কি।

অভিজিৎ ব্যানার্জি ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান। শিক্ষা জীবনে তাঁকে একবার জেলে যেতে হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এমএ ক্লাসের শিক্ষার্থী থাকাকালে এক ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। এই অভিযোগে তাঁকে ১০ দিন কারাগারে কাটাতে হয়েছিল। তা-ও আবার ভারতের আলোচিত তিহার জেলে রাখা হয়েছিল তাঁকে।

ইরানের অধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পান। কিন্তু নোবেল পুরস্কার গ্রহণের জন্য তিনি নরওয়ের অসলো যেতে পারেননি। দেশবিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সাল থেকে তাঁকে ইরানের কারাগারে বন্দী রাখা হয়। এমনকি নোবেল জয়ের পরও তাঁর ওপর থেকে শাস্তির খড়্গ নামেনি।

জার্মান নাগরিক সাংবাদিক কার্ল ভন ওজিয়েতস্কি ১৯৩৫ সালে শান্তিতে নোবেল পান। তিনিও নোবেল পুরস্কার নিজ হাতে গ্রহণ করতে পারেননি। কারণ তিনি নাৎসি বাহিনীর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী ছিলেন। ১৯৩৩ সালে হিটলারের ক্ষমতা দখলের আগে বার্লিনে পার্লামেন্ট ভবনে আগুন দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত করা হয় তাকে। পরেও আর কোনো দিন তিনি পুরস্কার হাতে পাননি। ১৯৩৯ সালে বন্দী অবস্থায়ই মারা যান তিনি।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি গৃহবন্দী থাকাকালে ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। পরে কয়েক দফায় তিনি মিয়ানমারে সরকারও গঠন করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার, ধর্মীয় উসকানি ও দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ আনা হয় সু চির বিরুদ্ধে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। ২০২২ সালে দেশটির আদালত সু চিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।

চীনের রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী লিও শাওবো ২০১০ সালে নোবেল পুরষ্কার পান। এর আগেই ক্ষমতার দান উলটে দেওয়ার কুশীলব অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। পরে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের দায়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চীন সরকার। ২০১৭ সালে কারাবন্দী অবস্থায় ক্যানসারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চীনেরই একটি হাসপাতালে।

২০২২ সালে শান্তিতে নোবেল পান বেলারুশের নাগরিক আলেস বেইলিয়াৎস্কি। ২০২১ সালে বেলারুশে নির্বাচনের সময় বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়লে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে দেশটির আদালত।

সমালোচকরা বলছেন, নোবেল জয়ী হলেই কেউ আইনের উর্দ্বে উঠে যায় না, দেশে দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচারই তার প্রমাণ। তবে ড. ইউনূসও তার ব্যতিক্রম নন। কিন্তু তিনি আইনি বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যেভাবে নোবেল প্রাপ্তির দোহাই দিয়ে দেশে বিচার বিভাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তা আর কোনো নোবেলজয়ী করেননি। 

আইনের চোখে একজন অপরাধী প্রমাণ হওয়ার পরও তিনি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে নেতিবাচক প্রচারণায় নেমেছেন, যা একজন নোবেল জয়ীর মর্যাদাকেই খাটো করে।প্রশ্নবিদ্ধ করে নোবেল প্রদানের উদ্দেশ্যকে। কাজেই তাঁকে দোষ স্বীকার করে নিজেকে আইনের কাছে সমর্পণ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

দিনবদলবিডি/Rabiul

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়